ডিসেম্বর মাসটা এলেই কেমন যেন এক অদ্ভুত বিষণ্নতা কাজ করে। পুরোনো দিনে কাটানো মধুর স্মৃতিগুলো সব একেবারে আঁকড়ে ধরে। ডিসেম্বর মাস মানেই আগে ছিল বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে লম্বা ছুটি। স্কুলের বন্ধুদের দেখতাম পুরো পরিবারের সঙ্গে কক্সবাজার বা দূরে কোথাও বেড়াতে যেত। কিন্তু আমার পক্ষে বেশির ভাগ সময় সম্ভব হতো না। কেননা মা–বাবা দুজন একসঙ্গে ছুটি পেতেন না। এ জন্য যে আমার খুব খারাপ লাগত, তা নয়। এলাকায় এ সময়টা উৎসবের আমেজ লেগেই থাকত।
এলাকার সব বন্ধু মিলে বিজয় দিবসের আগের দিন নিজেদের বাসার বাইরে ছোট–বড় সব আকারের পতাকা দিয়ে সাজাতাম। নিজেদের সাজানো হয়ে গেলে দেখতাম, কার সাজানোটা সবচেয়ে ভালো হলো। বিজয় দিবসে খুব ভোর থেকেই সাউন্ড সিস্টেমে দেশাত্মবোধক গান চলত। খাতায় লিখে লিখে মুখস্ত করা গানগুলো যতবার শুনতাম, ততবারই একধরনের ভালো লাগা কাজ করত। দুপুরে এলাকার কারও না কারও বাসায় গিয়ে দাওয়াত খেতাম আর সন্ধ্যা পর্যন্ত খেলতাম। এসবই ছিল তখনকার সময় আমার কাছে বিজয়ের সংজ্ঞা, স্বাধীনতার আনন্দ।
যত বড় হতে লাগলাম, খেয়াল করলাম যে স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে দায়িত্বে পরিণত হচ্ছে। আগের দিনের নম্বরের জন্য পড়ালেখা এখন পরিণত হয়েছে কবে দেশ ছাড়ব এই লড়াইয়ে। তবে ওই ছোটবেলার বিজয়ের আনন্দকে মাঝেমধ্যেই নিজের অজান্তে খুঁজে বেড়াই।
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়