কেউ কেউ ফেরে না
আমাদের বাড়ি বনের ঠিক পাশেই,
রাতে কান পাতলে শোনা যায়
হিংস্র শিয়ালের ডাক।
মাঝেমধ্যে ভরদুপুরে দেখতে পাই
পথে পথে তৃষ্ণার্ত বুনো শুয়োরের দল।
মাঝরাতে গগনবিদারী চিৎকারে ঘুম ভাঙে
মা বলেন, আহা! ও বাড়ির ছেলেটাকে বোধ হয়—
ততক্ষণে শিয়াল–কুকুরের উচ্ছিষ্টাংশ দেহাবশেষ
মাটিতে একটু একটু করে মিশতে শুরু করেছে।
আমরা কেউ এগিয়ে যাই না,
কারণ এই গল্প নিত্যদিনের।
তাই বলে আমরা কিন্তু মেরুদণ্ডহীন নই,
আমরা হঠাৎ হঠাৎ জেগে উঠি।
গাঁয়ের সকলে এক হয়ে
মশাল হাতে, বনের পথে
এগিয়ে যাই।
তারপর?
তারপর, নেমে আসে একপশলা বৃষ্টি
বন্যায় ভেসে যায় আমাদের গাঁ।
সেদিন আকাশ–বাতাস চারদিক
হয়ে ওঠে থমথমে।
আর বৃষ্টির রং রক্তবর্ণ।
আমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ আর ফেরে না।
কখনোই ফেরে না।
তবে সময় কিন্তু দাঁড়ায় না
আবার সূর্য ওঠে
সব ভুলে
আমরা কাজে ফিরি
শুধু গোধূলির অবসরে
মাঝেমধ্যে কানে বাজে
‘আমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ আর ফেরে না,
কখনোই ফেরে না।’