একটি শিশুর জন্ম
শোনো তোমরা, শোনো একটা কবিতা বলি
একটি শিশুর ভূমিষ্ঠের কথা বলি,
যে শিশুর জন্ম ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে
যে শিশুর জন্ম হাজারো লক্ষ ব্যথাবেদনা সয়ে।
জানতে চাও শিশুটি কে?
শোনো তবে, তার প্রতিটি অঙ্গে আমার মায়ের স্নেহ-মমতা
তার প্রতিটি ধূলিকণা আমার বাবার ভালোবাসা
তার বুকে মাথা রেখে আমার সকল আশা-নিরাশা।
তবে জন্ম এত সহজ ছিল না তার
থেকেছে সে দুই শ বছর ব্রিটিশের কারাগারে,
তারপর ব্রিটিশ গেল, এল পাকিস্তান
শিশুটির তবু হলো না যে কোনো উত্থান।
অনেক দিন পর কোনো এক কবি
কবিতা শোনাবেন বলে ডাকলেন রেসকোর্সে,
ছুটে গেল কৃষক, ছুটে গেল শ্রমিক, শিক্ষক আর সাধারণ মানুষ
যারা অধীর অপেক্ষায় ছিল শিশুটির মুখ দেখবে বলে।
তারপর কেবলই অপেক্ষা শিশুটি আসবে কবে?
হঠাৎ শিশুটি কেঁদে উঠল মার্চের ছাব্বিশে,
সবাই ভাবল—শিশুটি বুঝি ভূমিষ্ঠ হবে
কিন্তু না, না, হায়েনার দল উদ্যত সেদিন শিশুটিকে মারবে বলে।
এভাবে কাটতে লাগল নয়টি মাস
শিশুটিকে বাঁচাতে কত মায়ের কোল খালি হলো
কত পিতা তার অশ্রু বিসর্জন দিল
কত বোন ভাইয়ের জন্য পথ চেয়ে রইল
তবু অপেক্ষা—শিশুটি আসবে কবে?
অতঃপর এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
একাত্তরের ষোলই ডিসেম্বর
সকলেই খুশি সেদিন, পুলকিত সবার মন
কারণ, শিশুটির সেদিন ঘটেছিল আগমন।
জানতে চাও, শিশুটি কে? কোথায় সে এখন? কেমন আছে সে এখন?
শোনো তবে, শিশুটির নাম বাংলাদেশ
বয়স এখন তার বায়ান্নর গোড়ায়,
আর এখন সে তরুণ প্রজন্মের হাতে
যারা তাকে অনেক ভালোবাসে
হ্যাঁ, এই তরুণদের হাত ধরেই বেড়ে উঠবে সে
হবে স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ।