আলোহীন, অন্ধকার ও অনিশ্চয়তায় ভরা একেকটি সকাল

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ফেনী শহর। ফেনীতে সবচেয়ে বেশি মোবাইল টাওয়ার অচল হয়েছেপ্রথম আলো

আমাদের প্রতিটি সকাল সুন্দর না–ও হতে পারে। দেশের বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষের সকালগুলো আজ অনেক কষ্টের। যেন আলোহীন, অন্ধকার ও অনিশ্চয়তায় ভরা একেকটি সকাল। শোনা যাচ্ছে, বন্যার কারণে ভারতের বাঁধ খুলে দেওয়া এবং টানা বৃষ্টিতে পানির নিচে নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ দেশের আরও কয়েকটি জেলা। এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়ি ও রাস্তা পানির নিচে। এসব অঞ্চলের অনেকে অতীতে এমন বন্যা দেখেনি। ভেসে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। অনেক জায়গায় পানির স্রোত এত প্রবল যে, এসব অঞ্চলের মানুষ এখন ভয়ানক বিপর্যস্ত। ঘরে খাবার নেই। দাঁড়ানোর জায়গা নেই। সবাই ছুটছে আশ্রয়ের খোঁজে।

প্রথম আলো বন্ধুসভা ও প্রথম আলো ট্রাস্ট বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের রোলমডেল। আসুন, প্রত্যেকে অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসি।

এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্যোগপ্রবণ ১০টি দেশের মধ্যে আটটি এশিয়ায়। এশিয়ায় এসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। এশিয়ার বাইরের দুটি দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। আগের তুলনায় প্রতিনিয়ত দুর্যোগের ধরন ভয়াবহ হচ্ছে। প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ২০ কোটি মানুষ দুর্যোগের মুখোমুখি হয় এবং প্রায় ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

দশকের পর দশক ধরে বিশ্বের প্রভাবশালী ও বড় দেশগুলো বিপুল পরিমাণ কার্বন নিঃসরণসহ নানাভাবে এই পৃথিবীকে ধ্বংস করেছে। কিন্তু এ বিশ্বকে রক্ষার জন্য তেমন কিছুই করছে না।

পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশি বিপ্লবী, সংগ্রামী ও আবেগপ্রবণ। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। দেশের বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মানুষের সাহায্যে সবার এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তাহলে নিশ্চয়ই এই ভয়াবহ বন্যার কবল থেকে তাঁরা আবার জেগে উঠবেন। আবার ফিরে আসবে স্বপ্ন দেখা ও এগিয়ে যাওয়ার দিনগুলো।

লেখক ও সংগঠক