বন্ধুত্বের অনুভব

আহ শৈশব! ছবিটি সিলেট সদর উপজেলার মাসুকগঞ্জ গ্রাম থেকে তোলাছবি: আনিস মাহমুদ

শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে এসেছি। কত বন্ধুবান্ধব, স্বজন ও প্রিয়জনের সাক্ষাৎ মিলেছে এর মধ্যে। প্রেমপ্রীতি আর ভালোবাসা দিয়ে লালন করেছি তাদের। মনের কোণে ঠাঁই পেয়েছে কত মনের মানুষ। পাড়াগাঁয়ের সেই পাঠশালা থেকে শুরু করে স্কুলজীবন ও পরবর্তী জীবনে যারা ছিল একান্ত আপন। পরিবারের চেয়ে বেশি সময় তাদের সঙ্গেই কেটেছে। প্রতিটি মুহূর্ত যাদের নিয়ে ভালোবাসার চিত্র এঁকেছি বাঁধভাঙা নদীর তীরে। ফুটন্ত গোলাপের সুবাস ছড়িয়ে যাদের পাশে থেকেছি মুখর কাননের পত্রপল্লবে। তারাই আমার বন্ধু, তারাই আপনজন।

কালের আবর্তে সবকিছুই বদলায়। হারিয়ে যায় বন্ধু। শুধু হারায় না বন্ধুত্ব আর নিখাদ প্রেম। কর্মজীবন ও সংসার জীবনের ব্যস্ততায় অনেক বন্ধুই হারিয়ে গেছে। এক মুহূর্ত কথা বলার সুযোগও হয় না তাদের। এভাবে অনেককেই হারিয়েছি। বছর ঘুরে বছর আসে, সাক্ষাৎ হয় না তাদের সঙ্গে। যখনই মনে পড়ে, স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে নিঃশব্দে কথা বলি। সোনার হরফে লেখা তাদের নামগুলোতে হাত বুলাই। কাঁদতে হয় না, চোখের কোণ বেয়ে অশ্রু পড়তে থাকে মনের অজান্তে। শুধু পথ চেয়ে থাকি, আবারও আসবে বন্ধুরা।

অনেককেই তো হারিয়েছি। আবার অনেকেই আছে এখনো। কত দিন থাকবে, তা জানি না। শুধু এই আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছি, তবে তারাও কি হারিয়ে যাবে? কখন জানি তারাও পর করে চলে যায়। ভুলে যায়। মনে এমন বহু প্রশ্ন জাগে। মাঝেমধ্যেই মনকে প্রশ্ন করি, ‘এমন কেন হয়? এত গভীর বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা যাদের সঙ্গে, তারা হারিয়ে যায় কেন?’ তখন মন বলে, ‘না রে না। বন্ধু কোনো দিন হারায় না। বন্ধু চিরকাল বন্ধুত্বের ভেতর থেকে যায়। যা অনুভব করে নিতে হয়। নিঃশব্দে কথা বলে তাকে শোনাতে হয়। বন্ধুত্ব এমনই পরম সত্যের ছোট্ট একটি নাম।

যাত্রাবাড়ী, ঢাকা