প্রতিদান যখন বৃদ্ধাশ্রম!

বৃদ্ধাশ্রমে লেখকছবি: সংগৃহীত

ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকার সময় স্বামী মারা যান। যে সময়ে ভরসার আর কাছের মানুষের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তখন তিনি একা হয়ে যান। শতকষ্টের পর কোল আলোকিত করে ছেলেসন্তান এলো। কত স্বপ্ন মায়ের। ছেলে তাঁর দুঃখ ঘোচাবে!

নিজের সর্বস্ব দিয়ে ছেলেকে মানুষ করলেন। সে এখন বড় সরকারি কর্মকর্তা। নিজের ফ্ল্যাটে বউ-বাচ্চা নিয়ে থাকেন। কিন্তু বাসায় মায়ের জন্য জায়গার বড্ড অভাব। খোঁজও নেন না, মা যে বৃদ্ধাশ্রমে আছেন, তা–ও বোধহয় জানেন না। শুনে চোখ ভিজে আসে। কিন্তু কান্না করা যাবে না! আমরা তো গেছি দুঃখ ভাগ করে হাসি ফোটাতে।

তাঁকে হাসানোর জন্য বলি, ছেলে তো ছোটই ছিল, আবার বিয়ে করতেন। আপনার জায়গায় আমি হলে তো করতাম! কত সুন্দর করে আবার বউ সাজতাম। তিনি হাসলেন! বললেন, ‘আমি বিয়ে করলে আমার ছেলের জীবন তো আর সুন্দর হতো না।’
চাইলেই পারতেন নিজের জীবন নতুন করে সাজাতে। কিন্তু তিনি তো মা। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে যুদ্ধ করে গেছেন একাই। স্বামী নেই, নিজেও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নন। তবু ছেলের সুখের জন্য লড়ে গেছেন। আর সেই ছেলের ঘরেই এখন মায়ের জায়গা নেই।

তাঁকে বলেছি, দোয়া করবেন ছেলের জন্য। ছেলে ভালো থাকুক। তিনি বললেন, ‘তা করি সব সময়। ছেলে সুখে থাক।’

ম্যাগাজিন সম্পাদক, নোবিপ্রবি বন্ধুসভা