আব্বা, তোমার প্রতি ভালোবাসা

গত ১ সেপ্টেম্বর ছিল বিশ্ব চিঠি দিবস। এ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা আয়োজন করে বন্ধুদের চিঠি লেখা প্রতিযোগিতা। সেখান থেকে নির্বাচিত চিঠিগুলো পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

শ্রদ্ধেয় আব্বা,

আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। বহুকাল আপনার দেখা নাই। আপনার গলার আওয়াজ শোনা হয় নাই। তবে আপনার সঙ্গে আমার ক্ষণিকের স্মৃতি রয়েছে আজ‌ও। জানি না আমি একজন ভালো সন্তান হতে পেরেছিলাম কি না। তবে মন বলে যে কিছুটা হলেও হয়তো আপনার মনঃপূত হতে পেরেছিলাম। আপনার মুখে মুখে কথা বলার সাহস কোনো দিন করিনি। তাই একটা কথা সব সময় বলতে চেয়েও পারিনি, ‘আপনাকে অনেক ভালোবাসি, আব্বাজান।’

আপনি সব সময় গম্ভীরভাবে থাকতেন। সেভাবেই কথা বলতেন। আমাদের সঙ্গে যৎসামান্য রসিকতাও কখনো করেননি। তাই আপনাকে অনেক ভালোবাসলেও কখনো আব্বা থেকে আব্বাজান বলে ডাকার‌ও সাহস পাইনি। কিন্তু মনেপ্রাণে সব সময় আপনাকে শ্রদ্ধা করে গিয়েছি।

দুর্ভাগ্যক্রমে, আজ‌ও আপনাকে এই কথাগুলো বলার সেই সুযোগ আর নেই। শুধু আছে মনের মধ্যে একটা হাহাকার আর সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা যে হয়তো আপনি জানতেন আমি আপনাকে ভালোবাসি। সব সময় আপনার আদেশ-নিষেধ মেনে চলার কারণ শুধু আপনার প্রতি ভয় নয়, আপনার প্রতি অগাধ ভালোবাসাও।

এ যুগেও বাংলার আব্বাদের প্রতি ভালোবাসা নিবেদন প্রচলিত বিষয় নয়। তবু আপনার এই অনুপস্থিতির শূন্যতায় এ বছরের চিঠি দিবসে প্রথমবার সাহস করে জানিয়ে দিলাম, ‘আপনাকে ভালোবাসি, আব্বা। অনেক ভালোবাসি, আব্বাজান।’
আমি ভালো আছি। আম্মাও ভালো আছেন। আশা করি, আপনিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।

ইতি,
আপনার মানিক

বন্ধু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা