ভিক্ষুক

প্রতীকী ছবি

সারা দিন ভিক্ষা শেষে বাড়ির পথ ধরে বৃদ্ধ হাফিজ মিয়া। তার ভিক্ষাস্থল থেকে বাড়ির দূরত্ব মিনিট বিশেক। বাড়ি বলতে ফুটপাতের একটা ঝুপড়িতে থাকার ব্যবস্থা। হাফিজ মিয়া জন্মান্ধ। হাতে বহু বছরের বাঁশের পুরোনো লাঠি। লাঠিটিরও এখন হাফিজ মিয়ার মতো ভঙ্গুর অবস্থা। তার পকেট আজ বেশ ভারী।

এমনিতে আয়রোজগার বেশ ভালো। একে অন্ধ, তার ওপর আবার বয়োবৃদ্ধ। মানুষ দয়া করে হাফিজ মিয়াকে একটু বেশিই দেয়। সেখান থেকে আবার তাদের সরদারের একটা ভাগ আছে। তা দিয়ে যা থাকে, সেটাও খারাপ নয়। হাফিজ মিয়া তিন বিয়ে করেছিল। এখন তার সঙ্গে থাকে না কেউ। থাকলে বাড়ি ফিরে একটু আরাম পেত। চারটা গরম ভাত ফুটিয়ে রাখত। সঙ্গে হয়তো রসুনবাটা ও মসুরের ডাল।

তার সর্বশেষ বউয়ের নাম রাহেলা। বেচারি তার খুব যত্নআত্তি করত। আহা! কী শান্তির দিন ছিল। রাহেলা আগের দুই বউয়ের মতো ছেড়ে যায়নি। হঠাৎ রক্তবমি হয়ে মরে গেল। তখন থেকেই একা। এসব ভাবতে ভাবতে হাফিজ মিয়া হাঁটছিল। তার পথঘাট চেনা। একেবারে ছবির মতো। ঝুপড়ির কাছাকাছি পৌঁছাতেই একজন পেছন থেকে জাপটে ধরে। তিনি চিৎকার করতে গিয়ে বোঝেন, গলায় ধারালো কিছু একটা ধরা আছে। লোকটি আলতো করে তার সারা দিনের ভিক্ষার টাকা বের করে নেয়। হাফিজ মিয়া মনে মনে ভাবে, এসব না করে তার সঙ্গে ভিক্ষা করলেও তো পারে তারা!