ব্যালন ডি’অর রেসে মেসি কি সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন

লিওনেল মেসিছবি: রয়টার্স

বার্সেলোনার সঙ্গে দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময়ের সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০২১-২০২২ মৌসুমে পিএসজিতে পাড়ি জমান লিওনেল মেসি। কিন্তু মৌসুমটি তিনি নিশ্চিতভাবেই ভুলে যেতে চাইবেন। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৪ ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ১১টি গোল এবং সতীর্থদের দিয়ে করান আরও ১৪ গোল। ফলে ব্যালন ডি’অরের সেরা ২০-তে জায়গা মেলেনি রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অরজয়ীর। বিষয়টিকে তিনি হয়তো ব্যক্তিগতভাবেই নিয়েছেন! অবস্থা এমন যে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা করিম বেনজেমার ব্যালন ডি’অর জয়ের স্মৃতি এখনো পুরোনো হয়নি, তার আগেই ২০২২-২০২৩ মৌসুমের পুরস্কারটি জয়ের রেসে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

মৌসুমের মাত্র অর্ধেক শেষ হয়েছে। এর মধ্যেই মেসি সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৪ গোল করার পাশাপাশি এসিস্ট করেছেন ১৮টি গোলে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আর্জেন্টিনাকে দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা জিতিয়েছেন। নিজে হয়েছেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। এর বাইরে পিএসজির হয়ে জয় করেন ফরাসি সুপার কাপ। মৌসুমের আরও ছয় মাস বাকি। জয় করার সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লিগ ওয়ান। ফর্মটি ধরে রাখতে পারলে নিশ্চিতভাবেই আর্জেন্টাইন অধিনায়কের হাতে উঠতে যাচ্ছে অষ্টম ব্যালন ডি’অর!

বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার ট্রফি হাতে এমবাপ্পে
ছবি: রয়টার্স

সেরার এই রেসে মেসিকে বেশ ভালোভাবেই টক্কর দিচ্ছেন তাঁর পিএসজি সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পে। তিনি চারটি গোল বেশি করেছেন, ২৮টি। তবে এসিস্টের দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে (৭টি)। বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও রানার্সআপ হয়েছেন। ফাইনালে অতিমানবীয় পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। টুর্নামেন্টে সর্বাধিক ৮ গোল করে জিতেছেন গোল্ডেন বুট। মেসির মতো তিনিও ফরাসি সুপার কাপ জয় করেন।

এরপরই রাখতে হবে ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড আর্লিং হলান্ডকে। তাঁর দল নরওয়ে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ না পেলেও এরই মধ্যে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে ২৪ গোল ও তিন এসিস্ট করেছেন। যেভাবে একের পর এক গোল করছেন, তাতে বিশ্বকাপ না খেলেও ব্যালন ডি’অরের রেসে তিনি বেশ ভালোভাবেই আছেন।

নেইমার আছেন দুর্দান্ত ছন্দে
রয়টার্স

নেইমারকে ভুলে গেলে চলবে না। চলতি মৌসুমে ব্রাজিলিয়ান প্লেমেকারও আছেন দুর্দান্ত ছন্দে। চোটের কারণে বিশ্বকাপে খেলতে পেরেছেন মাত্র তিনটি ম্যাচ। একটি ম্যাচসেরার পুরস্কার ও নামের পাশে দুটি গোল। তবে এই সংখ্যা দিয়ে তাঁর পারফরম্যান্সের সঠিক মূল্যায়ন করা বোকামি হবে। মাঠে নেইমারের উপস্থিতি এবং পুরো দলকে খেলানোর দিক দিয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের প্রাণভোমরা তিনি। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নামের পাশে ১৮ গোল ও ১৫ এসিস্ট। পিএসজির হয়ে জয় করেন ফরাসি সুপার কাপ। সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লিগ ওয়ান জয়েরও। বন্ধু মেসির মতো তিনিও গত মৌসুমে ব্যালন ডি’অরের সেরা ২০-এ জায়গা পাননি।

কার হাতে ব্যালন ডি’অর উঠবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখন পর্যন্ত এই চারজন সবাইকে ছাড়িয়ে সেরার দৌড়ে আছেন। এর বাইরে বার্সেলোনার পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি, রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ম্যানচেস্টার সিটির বেলজিয়াম মিডফিল্ডার কেবিন ডে ব্রুইনে ও একই ক্লাবের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড জুলিয়ান আলভারেজকে তালিকায় রাখতে হবে।