পাপের ফিরিস্তি

অন্ধকার বিদীর্ণ করা সৌন্দর্যের নিচে দাঁড়িয়ে
জীবন মাপছি।
পরক্ষণে বুঝি,
এ-তো ভুলের ওপর ভুল!
পূর্ণ চতুর্দশী মোলায়েম চাঁদের নিচে প্রকৃত
জীবন কি আদৌ মাপা যায়?
ভুলকেই, ভুলক্রমে ভালোবেসে
স্বপ্নালু চোখের পর্দায় রূপকথার বুড়ির
অনবরত চরকা ঘোরানো দেখি।
দৃষ্টিসীমানা জুড়ে মোলায়েম চাঁদের আলোর সঙ্গে
প্রকৃতির গভীরতম প্রেমের নিবেদন চলছে।
এও কি প্রেম?
এও কি নিগূঢ় রহস্য?
তবে কি ভুল জুড়ে শুদ্ধতা থেকে যায়?
অথচ কত নিঃসঙ্গ একখানা চাঁদ!
ঘোর কেটে গেলে নিঃসঙ্গতা টের পাই।
সেই নিঃসঙ্গতার আঁধার নেমে আসে বুক বরাবর।

আবার জীবন মাপি।
সঙ্গে টের পাই ব্যর্থতা  
বুঝি, জীবন তো মাপা যায় না।
অতঃপর;
আঁধারে ঠান্ডা সরীসৃপের মতো গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকি।
বুকে-পিঠে, দিনে দিনে জন্মের পাপ জমিয়ে
শ্যাওলা ধরা প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।
হৃৎপিণ্ড বেয়ে উঠে, একটার পর একটা অতর্কিত হামলা।
এ-আমার আপন পাপের ফিরিস্তি।
হায়!
এত পাপের বোঝা কোন বাটখারায় মাপব?
যেখানে আজও জীবন মাপতে পারিনি।
বেঁচে থাকার গান শুনে
লড়াই করি জেতার,
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দেখলাম
জিতে গিয়েও পাওয়ার কিছু নেই,
হেরে গিয়েও হারার কিছু নেই।
অথচ কি নিবিড়ভাবেই না নিজেকে হারিয়েছি,
দিনের পর দিন ফুরিয়ে গিয়েছি
ঠিক ন্যাপথলিনের মতো।