রাজধানীর ধানমন্ডি লেকের পাশে এক কিশোরকে মারধরের ঘটনাটি কি মনে পড়ে? নুরুল্লাহ নামের এক কিশোরকে সমানে কিলঘুষি মারছিল জুনায়েদ নামের আরেক কিশোর। এ সময় পাশ দিয়ে কয়েকজন যুবককে হেঁটে যেতে দেখা যায়। কিন্তু তাঁরা প্রতিবাদহীন। ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে ভাইরাল হয়।
পরে জানা যায়, জুনায়েদের বান্ধবীকে নিয়ে কিছু একটা বলেছিল নুরুল্লাহ। তাই জুনায়েদের এই অগ্নিমূর্তি। শেষে এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হয়। মূলধারার গণমাধ্যমে খবরটি পরে আসে। কিন্তু সবার আগে আসে সামাজিক গণমাধ্যমে। আর এটিই নাগরিক সাংবাদিকতা। যিনি ভিডিওটি ফেসবুকে দিয়েছেন, তিনি নাগরিক সাংবাদিকতাই করেছেন। তিনি একজন নাগরিক সাংবাদিক।
অথবা ‘মধু হই হই বিষ হাওয়াইলা/ হন হারনে ভালোবাসার দাম ন দিলা’। কক্সবাজার সাগরপারের কিশোরকে যিনি আবিষ্কার করেছেন, ভিডিও ফেসবুকে বা ইউটিউবে প্রচার করেছেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে নাগরিক সাংবাদিকতাই করেছেন।
সংবাদ সংগ্রহ, প্রচার, বিশ্লেষণে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই সিটিজেন জার্নালিজম বা নাগরিক সাংবাদিকতা। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রে বসবাসরত প্রত্যেক নাগরিকই নাগরিক সাংবাদিক। অনলাইনে সাধারণ জনগণের যেকোনো ধরনের সংবাদ পরিবেশনই নাগরিক সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে। তাই অন্যভাবে বলা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা সাংবাদিক পরিচয় ছাড়াই তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো ঘটনা, কোনো বিষয়ে মতামত, তথ্য প্রদান, খুদে বার্তা, ভিডিও ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা কোনো গণমাধ্যমে প্রচারই নাগরিক সাংবাদিকতা।
প্রান্তিক সাংবাদিকতা, নেটওয়ার্ক সাংবাদিকতা, ওপেন সোর্স সাংবাদিকতা, অংশগ্রহণমূলক সাংবাদিকতা, বটম আপ সাংবাদিকতা, স্ট্যান্ড অ্যালন সাংবাদিকতা, ডিস্ট্রিবিউটেড সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত এই নাগরিক সাংবাদিকতা।
প্রত্যন্ত কোনো অঞ্চলে সাধারণ কোনো মানুষের মাধ্যমে স্থানীয় খেলার কোনো প্রতিবেদন যেমন নাগরিক সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে, তেমনি কোনো দেশে কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপিত জাতীয় সংবাদমাধ্যমের বাইরে সাধারণ নাগরিকের কোনো প্রতিবেদনও নাগরিক সাংবাদিকতা।
কীভাবে এল
নাগরিক সাংবাদিকতার শুরুটা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। অনেকের মতে, ১৯৮৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে মূলধারার সাংবাদিকদের ভিন্ন মতামতের কারণে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক দেখা যায়। এমন অবস্থায় নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের মতামত নিয়েই শুরু হয় নাগরিক সাংবাদিকতা। ওই সময় থেকে বিভিন্ন বিষয়ে একেকটি প্রকল্পের মতো নাগরিক সাংবাদিকদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো।
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে পশ্চিমা বিশ্বে ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়ে ওঠে। তৎকালীন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবকে কেন্দ্র করে অনেক যোগাযোগমাধ্যমের যাত্রা শুরু হয়। নাগরিক সাংবাদিকতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বছর ছিল ১৯৯৯ সাল। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সভা হয়। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নীতিবিরোধী বিক্ষোভকারীদের কাছে মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রচার পাওয়ার একমাত্র পথ ছিল রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা। তবে করপোরেট মিডিয়াগুলোতে ৬০ সেকেন্ডের ভিডিওতে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানো হলেও বিক্ষোভকারীদের দাবির কথা জানানো হয়নি। ওই ঘটনায় মার্কিনরা ভিন্নধর্মী সংবাদমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা ভালোভাবেই বুঝতে পারেন।
১৯৯৯ সালে ওই ঘটনার সময় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক ক্রিস অ্যান্ডারসন ইনডিপেনডেন্ট মিডিয়া নামের একটি যোগাযোগমাধ্যম চালু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষের সংবাদ, প্রতিবেদনসহ মতামত প্রকাশের সুযোগ তৈরি হয়। এই ‘ইনডিপেনডেন্ট মিডিয়া’কেই বলা হয় নাগরিক সাংবাদিকতার প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি। ১৯৯৯ সালের পর থেকে স্বাধীন গণমাধ্যম বা ইনডিপেনডেন্ট মিডিয়ার যথেষ্ট সাফল্য দেখা যায় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০০টি শহরে স্বাধীন মিডিয়া কেন্দ্র গড়ে ওঠে।
আক্ষরিক অর্থেই নাগরিক সাংবাদিকতার বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ২০০৪ সালে যাত্রা শুরু করে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। খুদে বার্তা আদান-প্রদানের ওয়েবসাইট টুইটারের যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এই দুটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পৃথিবীব্যাপী মানুষের যোগাযোগের এক অভূতপূর্ব সেতুবন্ধ তৈরি করে।
২০০৭ সালে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান অ্যাপল বাজারে আনে আইফোন। তবে কিছুদিনের মধ্যেই গুগলের অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক স্মার্টফোনে বাজার ভরে যায়। এই প্রযুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকে আরও সহজ করে তোলে। আর এমন সহজ ব্যবহার স্বভাবতই মানুষের তথ্য ও সংবাদ জানানোর পথে অভাবনীয় পরিবর্তন আনে। বর্তমানে স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মুহূর্তেই সংবাদ, ছবি, ভিডিও প্রকাশ করতে পারেন নাগরিক সাংবাদিকেরা। এরই মধ্যে চালু হয়ে গেছে মোবাইল জার্নালিজম বা মোজো। মোবাইল ব্যবহার করে আজকাল সিনেমার শুটিং পর্যন্ত হচ্ছে। নাগরিক সাংবাদিকেরা যেমন মোবাইল জার্নালিজম করছেন, তেমনি মূলধারার সাংবাদিকদেরও দেওয়া হচ্ছে মোজো প্রশিক্ষণ।
প্রয়োজন কেন?
বিকশিত গণতন্ত্রের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় একটি বিষয় হলো নাগরিক সাংবাদিকতা, যেখানে সাধারণ মানুষ নিজেদের মতামত, দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্লেষণ প্রকাশের সুযোগ পান। এ ছাড়া কোনো দুর্যোগে মূলধারার সংবাদমাধ্যমের অনুপস্থিতিতে পরিস্থিতি বুঝতে ভূমিকা পালন করে নাগরিক সাংবাদিকতা। ঘূর্ণিঝড়, বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার সময় আমরা দেখি, শহরের কোনো গলি বা গ্রামের কোনো সড়কের পানিতে উপচে পড়ার ছবি ও লেখায় ফেসবুকের পাতা ভরে যায়, এটাই নাগরিক সাংবাদিকতা। মূলধারার পক্ষে কোনোভাবেই এতটা প্রান্তিকে যাওয়া সম্ভব হয় না।
আবার মূলধারার সংবাদমাধ্যমে অনেক বিষয়ই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশের সুযোগ থাকে না, যা নাগরিক সাংবাদিকতায় সুযোগ থাকে। আর মূলধারার অনেক সংবাদমাধ্যমে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সরকারের প্রভাব থাকলেও নাগরিক সাংবাদিকতা এসব থেকে মুক্ত। এসব দিক বিবেচনা করলে নাগরিক সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।
নাগরিক সাংবাদিকতার কিছু নেতিবাচক বিষয় ও উপস্থাপন করেন অনেকে, যার একটি হলো বিশ্বাসযোগ্যতা। মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো সাধারণত পেশাদার সাংবাদিকদের দ্বারা বিশ্বাসযোগ্যভাবে সংবাদ উপস্থাপন করে, যদিও কথাটা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু নাগরিক সাংবাদিকদের অনেকেই সংবাদ পরিবেশনের মূলনীতি ও পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নন। তাই তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশে বিভ্রাটের আশঙ্কা থাকে, যা বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এ ছাড়া উগ্রপন্থীদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে নাগরিক সাংবাদিকতা ব্যবহৃত হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। একটি উদাহরণ দেওয়া যায়, মাস কয়েক আগে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে নিপীড়ন সেনাবাহিনী করেছে, তার ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে, কিছু ছবি ও ভিডিও মোটেই এই ঘটনাকেন্দ্রিক নয়। স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ।
বহির্বিশ্বের চিত্র
১৯৬৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যার ভিডিও ধারণ করেছিলেন আব্রাহাম জা গুডার, মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যাঁর কোনো যোগাযোগ ছিল না। তাঁর এই ভিডিওই পরে অনেক সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়। হোম-মুভি ক্যামেরায় তোলা ওই ভিডিওই নাগরিক সাংবাদিকতার প্রথম নিদর্শন বলা যায়। এই হিসাবে আব্রাহাম জাঁ প্রুডারই নাগরিক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ।
২০০১ সালে ৯/১১-তে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে সন্ত্রাসী হামলার অনেক ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায়, যা সাধারণ মানুষই তুলেছিল। সংবাদমাধ্যমগুলো সাধারণ মানুষের তোলা এসব ছবি ও ভিডিও প্রচার করে।
২০০৫ সালে লন্ডনে বোমা হামলার ঘটনাটি ধারণ করেছিলেন একজন সাধারণ নাগরিক। পরে তা বিবিসি, সিএনএনসহ অনেক প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
২০১০ সালে আরব বসন্তে বড় ভূমিকা পালন করে নাগরিক সাংবাদিকতা। ওই সময় কয়েকটি আরব দেশের নারী সাইবার অ্যাকটিভিস্টদের ওপর করা একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, সাইবারের জগতে প্রচারণার কারণে আরব বসন্ত নিয়ে সংবাদ পরিবেশনে বাধ্য হন মূলধারার সাংবাদিকেরা। আর এরই মাধ্যমে নাগরিক সাংবাদিক ও পেশাজীবী সাংবাদিকদের মধ্যেও সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচিত হয়।
২০১১ সালে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যায় অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে অভিযান চালায় মার্কিন বাহিনী। ঘটনাস্থলের মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে এক নাগরিক সাংবাদিকের খুদে বার্তা থেকে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে প্রথম জানা যায়।
একই বছর ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ আন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর অবস্থান নিয়ে অনেক নাগরিকই ছিলেন ক্ষুব্ধ। এসব ক্ষুব্ধ নাগরিকের অনেকে নিজেরাই নাগরিক সাংবাদিকতার মাধ্যমে ঘটনার বিষয়ে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত তুলে ধরেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নাগরিক সাংবাদিকদের এমন প্রতিবেদন বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় একসময় মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে সংবাদ প্রচারে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের হাল
বাংলাদেশে নাগরিক সাংবাদিকতার সূচনা ঘটেছিল ২০০৫ সালে ব্লগের মাধ্যমে। ‘বাঁধ ভাঙার আওয়াজ’ শিরোনামে ওই সময় যাত্রা শুরু করে সামহোয়ারইনব্লগ। পরবর্তী সময়ে মুক্তমনাসহ আরও কয়েকটি ব্লগের আবির্ভাব ঘটে, যা অচিরেই তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে প্রথম নাগরিক সাংবাদিকতাকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেয় মূলধারার গণমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ ডটকম। একই সময়ে অপর কয়েকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমও নাগরিক সাংবাদিকতাকে গুরুত্ব দেয়। এ ছাড়া অনেক সংবাদপত্রও জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে নাগরিক সাংবাদিকতা কর্নার চালু করে।
২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ সংগঠিত হয়েছে ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন নাগরিক সাংবাদিকেরা।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মূলধারার সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া অনেক ছবি ও ভিডিও থেকে ঘটনার সময়কার পরিস্থিতির চিত্র মেলে।
একই বছর দেশব্যাপী শিশু নির্যাতনের অনেক ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে যা মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচিত হয়। এমন অসংখ্য ঘটনার কথা বলা যাবে, যা প্রথম তুলে ধরেছেন নাগরিক সাংবাদিকেরাই।
বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সংবাদ জানার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া নাগরিক সাংবাদিকদের তথ্যের ওপর নির্ভর করে। কিছু ক্ষেত্রে তারা নাগরিক সাংবাদিকদের তথ্য থেকে সংবাদটি প্রচার করে, পরে নিজেদের অনুসন্ধান থেকে বিস্তারিত সংবাদ পরিবেশন করে। কিছুদিন আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাগরিকদের দেওয়া তথ্য নিয়ে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর উদাসীনতা দেখা যেত। বর্তমানে পরিস্থিতি পাল্টেছে। মূলধারার সংবাদমাধ্যম নাগরিক সাংবাদিকদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই অনেক সময় সংবাদ প্রচার করছে। অনেক সংবাদমাধ্যম ঘটনাস্থলে থাকা সাধারণ মানুষের বক্তব্য ও মতামতকেও গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে।
নাগরিক সাংবাদিকতা ইদানীং শুধু তথ্য দিচ্ছে না, খুলনার শিশু রাকিব, সিলেটের রাজন হত্যার মামলার বিচারপ্রক্রিয়াকেও ত্বরান্বিত করেছে। তাই নাগরিক সাংবাদিকতা সামনের দিনগুলোতে আরও জোরেশোরে থাকবে। নাগরিক সাংবাদিকতাই পথ দেখাবে মূলধারাকে।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের প্রকাশনা ‘তারুণ্য’, সপ্তম সংখ্যা, আগস্ট ২০১৮ থেকে নেওয়া।