অণুকাব্য

এক.
মৃত্যুর অনেক আগে জীবিত থেকেও কেউ কেউ
মরে যায়, শরীরের আর মূল্য কত;
মানুষ বড় অসহায়, নিজেকে নিজেই ধ্বংস করে!

দুই.
—রূপবতী হলেই অহংকারী হতে হবে?
—রূপ না থাকলে পেছনে ঘুরতে?

তিন.
ছেলেটা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে
মেয়েটা পায়নি;
তবু মুখে হাসি, ছেলেটাকে সে ভালোবাসে।

চার.
ধরো, একটি আলো হঠাৎ এলোমেলো—
ঘুরে দাঁড়ালে,
স্বর্গ থেকে প্রেম নেমে এল; কী করবে,
পালাবে না আঁকড়ে ধরবে?

পাঁচ.
যে ভালোবাসে না তাকেও ভালোবাসি
নিঃস্ব মানুষ আমি;
ভালোবাসা ব্যতীত কোনো সম্পদ নেই।

ছয়.
ভালোলাগা হারায়, ভালোবাসা কাঁদে
ভালোবাসা জানে, কাকে ভালোবাসে।

সাত.
যার যা আছে সে তা–ই দিতে চায়
শুধু ভিখারি যারা, একূল–ওকূল নেই
দু’হাত শূন্য ফাঁকা
তারা কেবল ভালোবেসে যায়
বিনিময়ে কিছু পাক বা না পাক,
নিশ্চিত তারা কিছু অবহেলা পায়।

আট.
কিছু না হোক,
কবিতা লিখে অন্তত তোমাকে পাই
কিছু না হোক,
একটা জীবন তোমার সঙ্গে সুখে কাটাই।

নয়.
স্পর্শ স্পর্শকে বৈধতা দেয়, সুর পড়ে থাকে
গান বয়ে যায়;
জীবন মূলত স্পর্শের অধিক কিছু নয়।

দশ.
গোলাপের দামে মেয়েটিকে কিনে নিতে
গিয়ে ছেলেটি বুক ভাসাল অশ্রুজলে।

এগারো.
যদি কেউ সমালোচনা না করে,
মন্দ না বলে,
ঈর্ষার শ্বাস না ফেলে দুপুরে ও ভোরে,
তবে আর ভালো করছি কই!

বারো.
একেক সময় একেক রকম মনে হয়
মনে হয়, যদি নাক ফুল হতাম
কত না ভালো হতো
কত না ভালো হতো কাচের চূড়ি হলে
খনখন শব্দে দুই হাতে নাচতাম
তুমি পরশ দিতে;
একেক সময় একেক রকম মনে হয়
মনে হয় যদি ভালো না বাসতাম
কত না ভালো হতো
নিঃসঙ্কোচের উন্নত জীবন পেতাম।

তেরো.
কেউ কাউকে ভুলে যাব না—কথাটা মিথ্যে
দূরত্ব বাড়লে মানুষ মানুষকে ভুলে যায়,
দায়িত্ব-কর্তব্য বিরহের চেয়েও যন্ত্রণাময়।

চৌদ্দ.
দৃঢ় বেদনার শেষের আনন্দের মতো
অমলিন হাসি হেসে
সমস্ত অপারগতাও জয় করে নেব।

পনেরো.
যৌবনের আগুনে স্মৃতিচিহ্ন এঁকে
বৃক্ষের সাজে এসেছি;
তোমাদের ভালোবাসতে শেখাব!