চিঠি

প্রিয় নৃ,
অনেক দিন পর আজ সকালে প্রথমবার বাসার জানালা খুললাম পুরোপুরি। ঘরের ভেতর সূর্যের আলো উঁকি দিয়েছে বিনা বাধায়। বেলকনিতে বসে বই পড়েছি একেবারে নিশ্চিন্তে। আজ আর কোনো আতঙ্ক কাজ করেনি মনে। পেয়েছি অফিসবিহীন একটা ঝলমলে সুন্দর স্বাধীন সকাল।
পাঁচতলার ওপর পুরো ফ্ল্যাটে আমি একা একটা মানুষ। সবাই বাসায় চলে গেছে। মিরপুরে যেভাবে ধরপাকড় হচ্ছিল, ভয়েই ছিলাম কিছুটা। বাসা থেকে নিয়ে গেলেও সে খবর জানবে না কেউ। অফিস থেকে ফিরে অনেকটা ট্রমার মধ্যে থাকতাম মৃত্যুর মিছিল আর নৃশংসতা দেখে। লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম রীতিমতো।
গতকাল যখন বাসা থেকে বের হচ্ছিলাম, তখনো মনে হচ্ছিল আর যদি ফিরে না আসি। আবার বাসায় বসে থাকলেও নিজেকে কোনো দিন হয়তো ক্ষমা করতে পারব না। আম্মাকে দেওয়া কথা রাখতে পারিনি। নিজেকেই বা কী করে আটকে রাখতাম! ইচ্ছে হচ্ছিল কয়েকটা চিঠি লিখে যাই তার জন্য। লিখতে গিয়েও লিখিনি।
এলাকার এক বন্ধু টাঙ্গাইল থেকে হেঁটে চলে এসেছিল লং মার্চে যোগ দিতে। টিভিতে দেখেছ নিশ্চয়ই, ঢাকার রাস্তায় কীভাবে নেমেছিল মানুষের ঢল। বিকেলে যখন মানুষের উল্লাস দেখছিলাম, সে দৃশ্য লেখার ভাষা নেই। সত্যিই এ এক নতুন বাংলাদেশ। বারবার রোমন্থন হচ্ছিল, ওরা পেরেছে!
ইতি,
আমি
মিরপুর ১০
৬ আগস্ট ২০২৪