মনের যত্নে একা ভ্রমণ

সব কাজ থেকে ক্ষণিকের বিরতি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন নিজের পছন্দের কোনো গন্তব্যে।

ব্যক্তিজীবনে চড়াই–উতরাই থাকবেই। এসব নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। তবে কখনো কখনো জীবন এতটাই বক্ররেখায় চলে, যখন নিজেকে খুঁজে পেতে একটু থামতে হয়। আবিষ্কার করতে হয় ভুলগুলো কোথায় হলো। এই ভুল থেকেই আবার নতুন করে পথচলা শুরু করতে হয়।

ভুলের কোনো বয়স নেই। ৩০ বছর বয়সে ভুল করে ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার ৪০-এ এসেও ভুল পথে পা বাড়াতে পারেন। মানুষ মাত্রই ভুল করে। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত জীবনের মোড় ঘুরিয়ে ফেলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সব কাজ থেকে ক্ষণিকের বিরতি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন নিজের পছন্দের কোনো গন্তব্যে। হতে পারে একটা সময় স্বপ্ন দেখতেন পছন্দের মানুষকে নিয়ে বিশেষ জায়গায় বেড়াতে যাবেন। হয়তো সেই মানুষটিকে নিয়ে সেখানে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। সেই জায়গাটাই হতে পারে আপনার হিলিং প্রসেসের/আত্মোপলব্ধির জায়গা।

নিজেকে জানার জন্য সোলো ট্যুর একটা দারুণ মাধ্যম।

কোথায় যাবেন
এসব ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন পাহাড় কিংবা সমুদ্র। সমুদ্রের বিশালতা মনকে প্রশান্তি দেবে। পাহাড় আপনাকে মানসিকভাবে উদার করবে। সমুদ্রের জলের কাছে চোখের জলকে নিতান্তই তুচ্ছ মনে হবে। সমুদ্রের তীরে বসে কাঁদলে ভালো বোধ করবেন। একাগ্রচিত্তে বলতে পারবেন নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। এখন থেকে যা করবেন নিজের ভালোর জন্য করবেন। একা বসে পছন্দের বই পড়তে পারবেন, গান শুনতে পারবেন, প্রিয় নির্মাতার সিনেমা দেখতে পারবেন, লিখতে পারবেন, পছন্দের রাইড ব্যবহার করতে পারবেন।

মন বারবারই বিষণ্নতায় ডুব দেবে। হতাশ হওয়া যাবে না। হিলিং প্রসেসটাই এমন। ভালো বোধ করবেন। মানসিকভাবে নিজেকে শক্ত মনে হবে। আবার খারাপ বোধ করবেন। আশপাশের অনেকের সঙ্গে, অনেক কিছুর সঙ্গে নিজের বিষয় গুলিয়ে ফেলবেন। নানান স্মৃতি আচ্ছন্ন করবে। তারপর আবার নিজের সুপ্ত শক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে আপনি পারবেন।

মনে রাখবেন, জীবন ভীষণ সুন্দর
ছবি: সংগৃহীত

একা ভ্রমণের সুবিধা
একা ভ্রমণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো কারও সঙ্গে টাইমিং মেলাতে হবে না। কী করবেন চিন্তা নেই, কোথায় যাবেন ভাবনা নেই, ঘুম থেকে ওঠার তাড়া নেই, খাবার নিয়ে বাছবিচার নেই, কেবল নিজেকেই অফুরান সময় দেওয়া যাবে। মোটকথা, আপনি আপনার মনের নিয়ন্ত্রণকারী। কেউ নেই সেখানে হস্তক্ষেপ করার। কারও পছন্দের কথা মাথায় রেখে খাবারের মেনু বা রাইড নির্বাচন করতে হবে না। কারও কথা মাথায় রেখে সকালে আরামের ঘুম তাড়িয়ে ব্রেকফাস্ট করতে যেতে হবে না।

তবে সোলো ট্যুর বেশি দিনের না হওয়াই ভালো। সে ক্ষেত্রে একাকিত্ব বিষণ্নতার আরেকটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার এটাও সত্য, একাকিত্বকে উপভোগ করতে পারলে একাকিত্বই শ্রেয়! নিজেকে জানার জন্য সোলো ট্যুর একটা দারুণ মাধ্যম। ট্যুরে বসেই একটা ছক এঁকে ফেলুন বাড়ি ফিরে কী কী করবেন, কীভাবে নিজেকে সময় দেবেন, কীভাবে আরও আত্মোন্নয়ন করবেন।

মনে রাখবেন, জীবন ভীষণ সুন্দর! আর জটিলতা আরও ভয়ংকর সুন্দরের জন্ম দেয়/ জীবনকে আরও সুন্দর করে।

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মালদ্বীপ টু বাংলাদেশ ভ্রমণে এয়ারক্রাফটে বসে লেখা