জীবন যেখানে যেমন
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত ধেয়ে আসছে মৃত্যু। পাক ধরেছে মাথার চুলে। দৃষ্টিশক্তিও দিন দিন কমে আসছে। প্রখর স্মৃতিশক্তি এলোমেলো হয়ে গেছে। কবে কার আঘাতে কষ্ট পেয়ে থমকে গেছি, মনে নেই। মনের সবটাজুড়ে বিষাদের আনাগোনা। এভাবে বেঁচে থাকার মধ্যে কোনো প্রবহমানতা নেই। আজকাল অন্ধকার খুব ভালো লাগে। ভয়ানক অন্ধকারে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে সুখ খুঁজি। মনের সুখ বলতে এখন অন্ধকারকেই বুঝি।
বিরান ভূমিতে ক্রমাগত হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি। পিছুটান বলে কিছু নেই। কষ্টগুলো এখন জমাটবাঁধা মেঘ হয়ে মাথার ওপর আকাশজুড়ে ভেসে বেড়ায়। মনের চাওয়া-পাওয়া বলতে কিছু নেই। ভোরের সূর্য উদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে গুটিয়ে নিই প্রকৃতির ক্যানভাস থেকে। নিজের নামের সঙ্গে এখন আর কারও নাম জড়িয়ে ফেলি না। নিজের ইচ্ছেকে বলি দিয়েছি অনেককাল আগেই। চোখের ঘুম ফেলে এসেছি পেছনের রাস্তায়। হাসতে ভুলে গেছি বিষাদের আবর্তন থেকে। জন্মের পর থেকে একটা অভিশপ্ত জীবন নিয়ে অবিরত দৌড়ে বেড়াচ্ছি। কোথাও থামার অবকাশ নেই। আমার কাছে জীবন মানে বেঁচে থেকেও মরে যাওয়া।
প্রতিটি রাতের দীর্ঘশ্বাসে ক্ষতবিক্ষত হৃৎপিণ্ডের শিরা-উপশিরা। ভাগ্যের লিখন এতটা নড়বড়ে, কখনো জানা ছিল না। মনের বিরুদ্ধে কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারিনি। কাউকে ঠকিয়ে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করতেও যাইনি। ভালোবাসা নামক অনুভূতি কখনো মনের ভেতর জাগেনি। তবু আফসোসের জায়গাটা ভারী হয়ে আছে। শূন্যতা ঘিরে আছে চারপাশ। এ যেন বেঁচে থেকেও মরে গেছি। ভুলে গেছি পূর্ণিমা জোছনায় গাঙের জলে সাঁতার কাটতে। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে নিজেই তার শিকার হয়েছি। পেটের দায়ে খেতে গিয়ে বাধিয়ে ফেলেছি মানসিক অসুখ। ভুলে গেছি ভালো থাকার মূলমন্ত্র। ঘুণ ধরেছে শরীরের পিস্টনে। কাঁদতে পারি না মনের কষ্টকে তাড়িয়ে দিতে। কাউকে বলতে পারি না আনীত জীবনের কথা। প্রবহমান জলের ধারায় জীবন ভাসাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছি আভিজাত্য হারিয়ে। বংশপরিচয় ভুলে গিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছি অ্যালুমিনিয়ামের পৃথিবীতে।
জীবনে বেঁচে থাকার মানে খুঁজেছি বহুবার। কখনো সমাধানে আসতে পারিনি। মেলাতে পারিনি ফলাফল। যা চেয়েছি, তা কখনো পাওয়া হয়নি। পাইনি বলেও কোনো দুঃখ নেই। পেয়ে গেলে হয়তো বুঝতাম না জীবনের আরেক নাম ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু। বেদনার বালুচরে হেঁটে বেড়িয়েছি বহুবার। কখনো থমকে দাঁড়িয়ে পান করেছি দুর্ধর্ষ মৃত্যু। মিউজিকের তালে গলার কণ্ঠ মেলাতে গিয়ে বেতালে জড়িয়ে গেছি ভাবনার খেয়ালে। পাতাশূন্য গাছের দুঃখ বুঝতে গিয়ে শেষমেশ আমাকেই জড়িয়ে ফেলেছি রহস্যের ইন্দ্রজালে। এই ঠুনকো জীবনে বসন্ত এসেছে একাধিকবার। কখনো তাৎপর্য বুঝতে পারিনি৷ কখনো ফুলের বনে হাঁটতে হাঁটতে বিস্ময়বোধ জাগেনি মনের অন্তঃপুরে। দেখেছি ফুলের সঙ্গে ভ্রমরের নিবিড় সখ্য। রাশি রাশি ফুলের সৌন্দর্যে কখনো মুগ্ধতা জাগেনি চেতনার বাহুডোরে।
বাড়ির নারিকেলগাছে বছরের পর বছর জোড়া শালিকের বাসা বাঁধতে দেখেছি। উঠানে ভাত ছিটিয়ে দিলেই তারা খেয়ে গেছে অবলীলায়। ধরেই নিয়েছিলাম তারাও আমাদের পরিবারের একাংশ। বিচ্ছিন্ন চোখে তাদের কখনো দেখতে পারিনি। বুলু নামের যে কুকুরটি পুষতাম, তাকে আদরে রেখেছি অনেক বছর। অতঃপর তার মৃত্যু হলে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। বাড়ির আঙিনায় দাফন করতে গিয়ে বুঝেছিলাম তার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল। ভালোবাসা পেলে বোবা প্রাণীরাও অনুভূতি বুঝতে পারে। বুঝতে পারে না শুধু মানুষ নামের ফানুসরূপী জন্তু-জানোয়ার।
মাকে দেখেছি ঈশ্বরের প্রতি প্রবল আত্মবিশ্বাসী। কখনো তাঁর থেকে বিশ্বাস হারাতে দেখিনি। বিপদের দিনে মাকে যেভাবে ঈশ্বরকে ডাকতে দেখেছি, সুখের দিনেও তার ব্যতিক্রম দেখিনি। মা ছিল আমৃত্যু ঈশ্বরভক্ত মানুষ। দিনমজুর বাবা যেভাবে আমাদের মানুষ করতে গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তার কোনো প্রতিদান হয় না। নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে বাবারাই শুধু সন্তানের জন্য সবকিছু অবলীলায় ত্যাগ করতে পারেন। বাবা নামক বটগাছটি যার মাথার ওপরে নেই, সেই বুঝবে জীবন কতটা কঠিন! প্রত্যেক বাবা তার সন্তানের জন্য আশীর্বাদ। আদতে বাবার বিকল্প কোনো মহামানব হয় না।
মন খারাপের দিনগুলোতে নদীপাড়ে একা দাঁড়িয়ে থাকি। কারও জন্য কোনো অপেক্ষা নেই। নিজের দুঃখবোধের সঙ্গে নদীর দুঃখ মেলাতে গিয়ে সংমিশ্রণ পেয়েছি বহুবার। নদীকে মা বলে সম্বোধন করেছি। নদীর দুগ্ধ পান করতে গিয়ে দুঃখ ভুলেছি মনের সুখে। কখনো তার বুকে গা ডুবিয়ে ভেসে গেছি স্রোতের ধারাক্রমে। সন্ধ্যায় বিরান ভূমিতে দাঁড়িয়ে নীড়ের টানে পাখিদের ফিরে আসতে দেখেছি। দেখেছি রাখাল ছেলেকে বাঁশি বাজিয়ে গরু নিয়ে ঘরে ফিরে আসতে। স্বামীর ফিরে আসার পথে নববধূকে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি এলোমেলো ক্লান্ত দেহে। তখন বুঝেছি অবলা নারীর ভালোবাসা কতটা মধুর হতে পারে। বোধ হয় স্বর্গের সুখ এর মধ্যেই নিহিত।
হেমন্তের সমাগম হলেই কৃষাণ-কৃষাণীর ব্যস্ততা বেড়ে যায়। নতুন ধানের ম-ম গন্ধে দখিনা বাতাস আচ্ছন্ন করে তোলে। হাসি ফুটে ওঠে কৃষকের মুখে। নতুন উদ্যমে বাঁচার প্রত্যয়ে দিনের পর দিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সোনালি ধান ঘরে আসে, সেই আনন্দের বাঁধ ভেঙে যায় কৃষকের উঠানজুড়ে। সেই নান্দনিক দৃশ্যপট দেখে মুগ্ধ হয়েছি লাখো বার। তখন বুঝেছি জীবন বোধ হয় এখানেই সুন্দর। এমন সুখগুলোই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায়।
প্রতিটি প্রাণী খুব কম আয়ু নিয়ে পৃথিবীতে আসে। কম আয়ু নিয়েই মানুষ হাজারো স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নগুলো পূরণ না হতেই বেশির ভাগ মানুষ হাঁপিয়ে ওঠে। কেউ কেউ অকালেই ঝরে যায় শিশিরবিন্দুর মতো। আবার কেউ কেউ সুখের নাগাল পেতে গিয়ে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে দিনের পর দিন। জীবন মানেই সংগ্রাম। জীবন মানেই বেঁচে থাকার লড়াই। যারা এই সংগ্রামে জিততে পারে, তারাই কিছুটা সুখ অনুভব করতে পারে। বাকিরা ভাগ্যের দোহাই দিয়ে থমকে যায়। আদতে তারা কিছু অর্জন করতে পারে না। প্রতিটি পদক্ষেপে যারা শেষ পর্যন্ত লড়তে পারে, তারা কখনো পরাজয় মেনে নিতে পারে না। তারা জিতেই ছাড়ে। এসব মানুষের অত্যধিক সম্মানের চোখে দেখি। স্যালুট দিতেও ভুলি না।
প্রতিটা দিন সবার জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। যারা এর যথাযথ ব্যবহার করতে পারে, দিন শেষে তারাই বিজয়ের মালা গলায় নিয়ে হাসতে পারে। ‘পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না’ এটা যারা মানতে পারবে, তারা কখনো থেমে যাবে না। সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে এগিয়ে যায় বীরের বেশে। কোনো প্রতিবন্ধকতা তাদের আটকাতে পারে না। আকাশজুড়ে একটাই সূর্য। অথচ এর আলোতে পুরো পৃথিবী আলোকিত। এর আলোতে কোথাও অন্ধকার বিরাজ করতে পারে না। তাই আমাদের সূর্য হতে হবে। কখনো চাঁদের মতো ধার করা আলোয় পথ হাঁটা যাবে না। অলসতায় বসে থেকে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে কেউ কখনো সফল হতে পারেন। পারবেও না কোনো দিন।
আজকাল মানুষের প্রতি মানুষের দায়বদ্ধতা কমে গেছে। এদের আচরণে স্বয়ং ঈশ্বর এখন বিক্ষুব্ধ। রাস্তায় বের হলেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রমরমে প্রতিযোগিতা দেখি। নিত্যপণ্যের বাজারে গেলেই মাথায় আগুন ধরে। জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী। যার ফলে দিনমজুরের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের পরিধি বেড়ে যাচ্ছে। ঘুষবাণিজ্যে ছেয়ে গেছে দেশ। বেকারত্ব দিন দিন জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। কর্মজীবী মানুষগুলো পরিশ্রম অনুযায়ী উপযুক্ত মজুরি পাচ্ছে না। দিন দিন জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। অথচ পিছিয়ে যাচ্ছে দেশ। দৃঢ় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কেউ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছে না। জীবনমান কমে যাচ্ছে। এমন হতে থাকলে শিগগিরই বড় ধরনের বিপদ নেমে আসবে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে।
অতিরিক্ত জনসংখ্যার ফলে বেড়ে যাচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড। প্রতিমুহূর্তে অক্সিজেনের ঘাটতি পড়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত গাছপালা কেটে মানুষ বসবাসের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ করছে। এমন হওয়ার ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বেড়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে নিম্নভূমি সমুদ্রের কবলে নিমজ্জিত হতে শুরু করেছে। অথচ পরিবেশ রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসছে না। সবাই যার যার স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। তখন চাইলেও সেখান থেকে কেউ উত্তরণ হতে পারবে না। ইতিমধ্যেই পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। অতিরিক্ত গরমে বনভূমি উজাড় হয়ে যাচ্ছে। মরে যাচ্ছে বন্য প্রাণীগুলো। অনেক প্রাণীই এখন বিলুপ্ত হওয়ার পথে। বন্য প্রাণী রক্ষা করতে হলে অবশ্যই বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনার জন্য যা যা পদক্ষেপ নিতে হয়, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্লাস্টিকজাতীয় জিনিসপত্রের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নয়তো মুক্তি নেই এ রকম পরিস্থিতি থেকে।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। মানুষের কাজের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে হবে। অযথা বসে সময় নষ্ট করা যাবে না। বেঁচে থাকতে অবশ্যই কর্মময় জীবন বেছে নিতে হবে। নিজের স্বার্থকে বড় করে না দেখে অন্যের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। কেউ বিপদে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। সাহস জোগাতে হবে। ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগাতে হবে। তবেই দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে। প্রত্যেক মানুষ যদি তার জীবনটাকে অর্থবহ গড়ে তুলতে পারে, তাহলে মৃত্যুর পরও তার অবদান থেকে যাবে পৃথিবীর বুকে।
জীবন একটাই। দ্বিতীয়বার জন্ম নেওয়ার সুযোগ নেই। এক জন্মেই হাজার জনমের ভালো কাজ করে যেতে হবে। একবার ব্যর্থ হলে বারবার তা চেষ্টা করতে হবে। কোনোভাবেই থেমে যাওয়া যাবে না। যতবার মৃত্যুর কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে গেছি, ততবার নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। জীবনে দুঃখবোধ থাকবেই। তাই বলে হতাশ হওয়া যাবে না। এর মধ্যেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি বহুবার। কখনো কখনো স্বেচ্ছায় নিজেকে মৃত্যুদণ্ড দিতে চেয়েছি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে নিজের মৃত্যু কার্যকর করতে চেয়েছি বহুবার। কিন্তু পারিনি। জীবন বড়ই বিচিত্র। ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায়। ভিন্ন আবহে পথ চলতে চায়। ছন্দের পতন হয় মাঝেমধ্যে।
কয়েক যুগ পেরিয়েও পাইনি জীবনের স্বাদ। নিবিড় পর্যবেক্ষণে সুখ খুঁজে যাই অবিরাম। পাই বা না পাই, তবু কুহক আশায় বেঁচে থাকা অন্ধকার এক ঘূর্ণিপাকে। শুকনা নিশ্বাস নিতে নিতে খেই হারিয়ে ফেলি অবচেতন চিত্তে। জীবন যেন বাহান্ন তাসের চেয়েও অদ্ভুত রকম বিচিত্র খেলার বড় আয়োজন। এখানে কেউ পাকা খেলোয়াড়, কেউবা দর্শকসারিতে বসে হাততালি বাজায়। দিন শেষে হারিয়ে যাই অদৃশ্য অন্ধকারে বিষাদময় গল্পের ভেতর। যেখানে কেউ আমাকে খুঁজে পাবে না বৈজ্ঞানিক অস্ত্র ব্যবহার করেও। আমি মানুষ নাকি অমানুষ—এখনো তার ব্যাখ্যা পেলাম না প্রকৃতির কাছ থেকে। তবু এই দুইয়ের মধ্যে এক অদৃশ্য আত্মা হয়ে ঘুরে বেড়াই অবনত স্থির অমাবস্যার অন্ধকার হয়ে। আহারে পৃথিবী, আহারে মৃত্যুর নান্দনিক সৌন্দর্য!
চৌহালী, সিরাজগঞ্জ