অপেক্ষার আপেক্ষিকতার মান শূন্যে নেমে এলে আমাদের সম্পর্কে থেকে যায় শুধুই উপেক্ষা। অথচ উপেক্ষিত হয়েও প্রতীক্ষায় বেঁচে থাকার কী তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমাদের। আজ সেই উপেক্ষার একটি বছর...।
আচ্ছা, কোনো এক জোছনাভরা মধ্যরাতে দিঘিরপাড়ে বসে হঠাৎ যদি উপন্যাসের মতো বলি, ‘তুমি আমার জন্যে দুফোঁটা চোখের জল ফেললে, তার প্রতিদানে আমি জনম জনম কাঁদিব’ তখন কি প্রত্যুত্তরে তুমি মৃদুস্বরে গেয়ে উঠবে, ‘চোখে চোখে শুধু চাওয়া, তাই চোখের জলে তোমার আমার ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া। সখী ভালোবাসা কারে কয়?’ সত্যিই এই অনিশ্চয়তা, আপেক্ষিকতা, উপেক্ষা ও প্রতীক্ষার মধ্যে ভালোবাসাটা ঠিক কোথায়?
প্রায়ই বলি বহুদিন আমাদের দেখা হয় না। অথচ রোজ রাতে যে আকাশে তোমায় দেখি, তা তো খেয়াল করি না। খেয়াল করি না বাগানবিলাসের কোন গুণে এ ফুল আমার এত ভালো লাগে। শুধুই কি তোমার প্রিয়, তাই? নাকি তোমার স্নিগ্ধতা তাতে খুঁজে পাই, তাই? নীল পাঞ্জাবিতে তোমায় দেখতে দেখতে খেয়াল করিনি কখন বেদনার রঙেও আমার তোমাকেই মনে পড়ে। এই মনে পড়াটুকুই হয়তো ভালোবাসা।
উপেক্ষার একটি বছরে কত কিছু হলো। প্রতীক্ষা উপেক্ষিত হলো, আক্ষেপ বাড়ল, পরিশেষে অপেক্ষার প্রত্যাখ্যান। তবু ভেবে যাই, তোমাকে পেতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আজীবনের আক্ষেপ হওয়ার আগে শেষবার তোমার আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে দেখতে চাই। কারণ, কখনো না কখনো শেষবার আমি তোমাকে দেখব, কখনো না কখনো শেষবার তোমার প্রেমে পড়ব। কখনো না কখনো কাউকে ভালোবাসার প্রয়োজনে আমি তোমায় ভালোবাসা থামাব। কিন্তু সব কি চাইলেই ভুলে যাওয়া যায়? নাকি ভুলে যাওয়া কখনো প্রাপ্তির অংশ ছিলই না? শেষে নজরুলের মতো বলতে হয়, ‘তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন, সে জানে তোমারে ভোলা কি কঠিন’।