মানসিক স্বাস্থ্যে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন

শৈশবের অভ্যাস শিশুর স্বাস্থ্যে স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারেছবি: বিবিসি

আগামী ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এ দিবসকে কেন্দ্র করে অনেক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা নানা পদক্ষেপের কথা বলবে। তবে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কেবল দিবসকেন্দ্রিক কাজ করলে এর কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। সুফল পেতে হলে সারা বছর এ নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে—‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন’। অর্থাৎ শরীর ভালো থাকলেই কেবল মন ভালো থাকবে। শরীর ভালো না থাকলে মন ভালো থাকে না। তাই বলাই যায়, শরীর ও মন একটি অপরটির পরিপূরক।

মানসিক স্বাস্থ্যে স্টিগমা বা প্রচলিত কুসংস্কার হলো সমাজের অগ্রহণযোগ্যতা বা মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির প্রতি পরিবার ও সমাজের হেয় মনোভাব। সমস্যার সমাধান বা সহযোগিতার পরিবর্তে আক্রান্ত ব্যক্তি যে বিপরীত আচরণ পাচ্ছেন, তা বৈষম্য তৈরির প্রাথমিক কারণ। আমরা সবাই শরীরের যেভাবে যত্ন নিই, ঠিক ততটাই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীন ও অযত্ন করি, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

জীবনের পরিক্রমায় আমরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হই। জীবনের বেশির ভাগ বিষয় ইতিবাচক থাকলে ভালো মানসিক অবস্থা উপভোগ করি। প্রিয়জনের বিয়োগ, আর্থিক বা সম্পর্কের টানাপোড়েনের মতো বিষয়গুলো কিছুটা ঝাঁকুনি দেয়, যা আমরা অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা দিয়ে মোকাবিলা করি। তবে কখনো কখনো জীবনসংগ্রামের এমন একটা পর্যায়ে আমরা পৌঁছে যাই, সেখানে কোনো কূলকিনারা দেখতে পাই না। এমন মানসিক দুর্দশা থেকে বের হতে হলে ধরতে হবে অভিজ্ঞ হাত। সে সময়ের প্রচেষ্টা আমাদের মানসিক রোগগ্রস্ত হওয়া থেকে পরিত্রাণ দেয়। মানসিক রোগে আক্রান্ত মানুষও যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো মানসিক অবস্থা উপভোগ করতে সক্ষম হন। প্রত্যেক মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যক্তিগত উদ্যোগ, পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগ এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

দেশের আনাচকানাচে মানসিক স্বাস্থ্যসচেতনতা পৌঁছে দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইতিবাচক ব্যবহারে আরও সচেতন হতে হবে। আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। তাই সদ্য জন্মগ্রহণ করা শিশু থেকেই নিশ্চিত করতে হবে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা।

লেখক, গণমাধ্যমকর্মী