বাউত উৎসব

চলনবিল–অধ্যুষিত পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার রহুল বিলে মাছ শিকারে নেমেছেন শৌখিন মৎস্যশিকারিরা। আঞ্চলিক ভাষায় দল বেঁধে মাছ শিকারের এই আয়োজনের নাম ‘বাউত উৎসব’। রহুল বিল, ভাঙ্গুড়া, পাবনাছবি: হাসান মাহমুদ

শত শত নদী আর অসংখ্য খাল-বিল নিয়ে গঠিত সবুজ শ্যামল এই দেশে মাছ ধরার রয়েছে বহু পদ্ধতি এবং উৎসব। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাউত উৎসব, যা মূলত পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব নামে পরিচিত। এটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব হিসেবে বহুকাল ধরে এ দেশে চলে আসছে। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে মহাসমারোহে এই উৎসব চলে।

মূলত বর্ষা মৌসুম শেষে জল যখন কমতে থাকে, তখন কোনো এক সময় পলো হাতে নেমে যান মৎস্যশিকারিরা। অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শত শত শৌখিন মৎস্যশিকারি। তাঁরা পলো (মাছ ধরার জন্য বাঁশের তৈরি বিশেষ ফাঁদ) নিয়ে অল্প জলে নেমে পড়েন। পলো হাতে বাউত উৎসবে মাতেন। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের করতোয়া নদীতে এবং পাবনা ও পার্শ্ববর্তী নাটোর, বগুড়া, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে ডিকশির বিলে বাউত উৎসবে অংশ নিতে। যদিও এখন আর আগের মতো মাছ ধরা পড়ে না। তবু শৌখিন মৎস্যশিকারিদের বিরাম নেই।

বিলের পানিতে সাধারণত বোয়াল, রুই, গজার, ফলি, কাতলা, শোল ইত্যাদি মাছ ধরা পড়ে। এই বাউতদের চলাচলে বিলের জল ঘোলা হয়ে ওঠে। তখন মাছ ভেসে ওঠে। পাবনা–সিরাজগঞ্জে পুরোনো ঐতিহ্য বাউত। মাছ পাওয়া যাক আর না যাক, ক্ষতি নেই। পলো বা বাউত নিয়ে নেমে পড়লেই হলো। দিন শেষে মুখভর্তি যে আনন্দ থাকে, তাই গ্রামবাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য।

পাবনা সদর, পাবনা