সুস্থ থাকুন ভ্যাপসা গরমে

সুস্থ থাকুন ভ্যাপসা গরমেফাইল ছবি

প্রকৃতিতে এখন ঋতুর আবর্তনে বর্ষাকাল। ষড়ঋতুর এই দেশে সাধারণত এ সময়টাতে মেঘ–বৃষ্টির মিতালি জমে বেশ, গ্রীষ্মের দাবদাহও কমতে থাকে। কিন্তু এবার যেন বৃষ্টির দেখা মেলাই ভার, সেই সঙ্গে আকাশে শরৎ ও হেমন্তকালের মতো বিক্ষিপ্ত মেঘের আনাগোনা এবং তীব্র খরতাপ। এই তীব্র গরমে বাড়ছে অসুস্থতা, ঘটছে হিটস্ট্রোকের ঘটনা।

প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ায় যখন শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়, তখন একে ‘হিটস্ট্রোক’ বা ‘সান স্ট্রোক’ বলে। যাঁরা দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদে কায়িক পরিশ্রম করেন, তাঁদের হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।

লক্ষণ:

হিটস্ট্রোক হওয়ার আগে প্রাথমিকভাবে হিট ক্র্যাম্প বা হিট এক্সহশন হয়। হিট ক্র্যাম্পে শরীরের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে এবং প্রচণ্ড পিপাসা পায়। এর পরের ধাপে হিট এক্সহশনে দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব, অসংলগ্ন আচরণ ইত্যাদি দেখা দেয়।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলো:

শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যাওয়া।

ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া।

ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যাওয়া।

নিশ্বাস দ্রুত হওয়া।

নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হওয়া।

রক্তচাপ কমে যাওয়া।

খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, অস্পষ্ট কথা, এমনকি রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।

আক্রান্ত হলে করণীয়:

রোগীকে দ্রুত রোদ থেকে দূরে ছায়াযুক্ত পরিবেশে নিয়ে যেতে হবে।

শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে প্রচুর বাতাস করতে হবে।

বরফ পানি দিয়ে গা মুছিয়ে দিতে হবে।

রোগীর জ্ঞান থাকলে তাঁকে পানি বা খাবার স্যালাইন খেতে দিতে হবে।

যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রতিরোধ:

যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে হবে।

বাইরে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করতে হবে।

হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। কাপড় সাদা বা হালকা রঙের হতে হবে। সুতি কাপড় হলে ভালো।

প্রচুর পানি, সম্ভব হলে খাবার স্যালাইন পান করতে হবে।

এই গরমে হিটস্ট্রোক জীবন বিপদাপন্ন করে তুলতে পারে। তবে সচেতনতা এবং সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তা এড়ানো সম্ভব।

এমবিবিএস, ইন্টার্ন ডক্টর-ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ