পূজায় সারা বেলা

পূজামণ্ডপে লেখকছবি: সংগৃহীত

সারা বছর ধরে পুজো পুজো ব্যাপারটা মাথার মধ্যে ঘুরলেও শরৎ এলে শিউলির গন্ধে আর কাশফুলের দোলার সঙ্গে এ আমেজে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়। এরপর দুর্গাপুজা শুরু হওয়ার আগে মহালয়ার দিন থেকে সেটা যেন মনকে আরও উতলা করে তোলে।

একসময় মহালয়ার পূর্ণ তিথিতে দেবীপক্ষের শুরুর সঙ্গে ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে টেলিভিশনে মহিষাসুরমর্দিনী দেখতাম। আর এখন পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে নিজের ক্যাম্পাসে ‘আনন্দবাজার’-এ ঢাকের তালকে সঙ্গ করে পুজোর এক অন্য রকম আমেজে মেতে উঠি।

দুর্গাপুজোয় একই মণ্ডপে বারবার যাওয়া বা ভিন্ন ভিন্ন মণ্ডপে যাওয়া, সবকিছুর মধ্যেই রয়েছে এক অন্য রকম আনন্দ। এই পুজো বন্ধনেরও। এ বন্ধন আত্মিক। অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে, পুজোতে কেন পশ্চিমবঙ্গে থাকি না? যতই হোক ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ স্বীকৃত দুর্গাপুজো দেখার এত বড় সুযোগ হাতছাড়া করা কেন? এর উত্তর, ওই যে আত্মার টান। সবচেয়ে বড় পুজোর দিনে যদি বাড়ি থেকে দূরে থাকতে হয়, তবে আনন্দে ভাটা পড়াটাই স্বাভাবিক। তাই তো ফিরে আসি আত্মাকে শান্তি দিতে। নতুন পোশাকে নিজেকে মুড়িয়ে নিয়ে সকালের অঞ্জলি বা সন্ধের পূজা পরিক্রমা সব চলতে থাকে আনন্দ-উত্তেজনার সঙ্গে। খাওয়াদাওয়ায়ও ভিন্নমাত্রা যোগ হয় এই দিনগুলোতে। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব সবার সঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে দিনগুলো কেটে যায় আনন্দে। এরপর দশমী আসে, আবারও মন ভার হয়ে থাকে মাকে বিদায় জানানোর বেদনায়। তবু আশা নিয়ে বসে থাকি এই ভেবে যে আসছে বছর আবার হবে।

বিশ্বভারতী, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত