হৃদয়েশ্বরী

প্রতীকীছবি: মো. আল-আমিন মাসুদ

দূর বালুচরে ভাঙা ঢেউয়ের ক্লান্ত আলোয়,
কাদামাটির নরম বুকে শুয়ে থাকা,
ডুবসাঁতারের স্মৃতিতে ঢেকে যাওয়া নুড়িপাথর,
চোখের গভীরে জমে থাকা শুকনা মেঘের শ্বাস,
এক নিঃসঙ্গ স্রোতের শিরা!
তুমি এলে—
নদীর তলদেশে উঠল সোনালি জোয়ার,
আমার নিশ্বাসে ভাসল বুনো ঘাসের গন্ধ,
চোখে নেমে এল বর্ষার প্রথম বিদ্যুৎ!
তুমি সেই—যে ভাঙা পালকের গহ্বরে
জমে থাকে অশ্বত্থের বিষণ্ন জ্যোৎস্না;
আমার মগজে মননে গজায় সৃষ্টির জোয়ার—
এক আত্মহারা নদী, যার তলদেশে
লুকিয়ে আছে প্রবাল চাঁদের মৃতদেহ!

শোনো—
ভাটার কঙ্কাল গুনে গুনে ডাকে পাখিরা,
আমার রক্তে তুমি লিখে দাও ভুলে-যাওয়া জোয়ারের কবিতা!
এই পৃথিবী যেন একটি শামুক, খোলসের ভেতর
ফিসফিস করে তোমার নাম—নদী, জোয়ার, অন্ধকার!
তুমি ছাড়া আমি সেই কাকডাকা ভোরের বিষণ্নতা—
যেখানে জমে আছে শুধু বৃষ্টির আগমনী গান!
তোমার স্পর্শে ভেঙে যায় সমস্ত নিঃসঙ্গতার ব্যাকরণ—
কিন্তু তুমি ছাড়া আমি—
এক পলাতক মেঘ, এক নির্বাসিত সমুদ্র কিংবা এক স্তব্ধ রাত,
যার শরীরে ঝড় আসে, কিন্তু কোনো বিদ্যুৎ জাগে না!
স্রোতহীন স্রোতস্বিনীর মতো আর্তচিৎকার করে,
আমিও মরব—তোমার নামের অক্ষরগুলোকে
মুখে নিয়ে, শঙ্খচিলের চিৎকারের মতোন!