সেরা ১০ লেখক বন্ধু পুরস্কার পেলেন। আমি পাইনি, তবে খারাপ লাগেনি। মনে হয়েছে, আমার লেখাগুলোকে আরও ভালো করতে হবে। আগামী বছর পুরস্কার পাওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে।
বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে ‘লেখক বন্ধু উৎসব’ হবে। খবরটি যেদিন শুনি, সেদিনই রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম। আর ভাবতে থাকি, আমি কি অংশগ্রহণের সুযোগ পাব! কিছুদিন পর ই–মেইলে আমন্ত্রণপত্র পেলাম। এর পর থেকেই ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু।
১ জুন সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলাম। পৌঁছাতে রাত দেড়টা বেজে গেল, শাহবাগে নেমে রিকশায় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ৭১ হলে। সেখানে আমার এক বন্ধু থাকে, ঢাবিতে পড়াশোনা করে। তাকে আগেই জানিয়ে রাখি দুই দিন ওর হলে থাকব।
উৎসবের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে পড়লাম। শাহবাগ থেকে বাসে করে কারওয়ান বাজার, তারপর হেঁটে প্রথম আলো বন্ধুসভাকক্ষে। অনেকে এরই মধ্যে এসে উপস্থিত। ক্যানটিনে নাশতার টেবিলে চট্টগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী থেকে আগত বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হলাম। নাশতা সেরে প্রথম আলোর ১০ তলায় গিয়ে দেখি, সভাকক্ষটিকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। কিছুক্ষণ পর আলোচকেরা আসতে শুরু করলেন। সবার পরিচয়পর্বের পর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথমেই কবিতা নিয়ে কথা বললেন কবি ও প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ। ওনার ‘ঢেউ’ কবিতার বিশ্লেষণ, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা বেশ উপভোগ করি। কবিতায় সুররিয়েলিজম, সাইকেডেলিকের ধারণাগুলো তিনি সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলেন। গল্প লেখার কৌশল নিয়ে কবি ও লেখক শাহনাজ মুন্নীর আলোচনা আমাদের নিয়ে যায় অন্য এক জগতে।
কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হককে একটি প্রশ্ন করার মাধ্যমে বুঝতে পারি, তিনি অনেক আশাবাদী মানুষ। আমি জিজ্ঞাসা করি, এই প্রজন্মে কেন ভালো কবিতা, উপন্যাস তৈরি হচ্ছে না? যেটা হৃদয়স্পর্শী হবে, কোথায় ঘাটতি রয়েছে? তখন উনি আমার প্রশ্নের জবাবে বললেন, অবশ্যই এখনো ভালো লেখা হচ্ছে। তিনি কয়েকটি বই পড়ারও পরামর্শ দিলেন।
সেরা ১০ লেখক বন্ধু পুরস্কার পেলেন। আমি পাইনি, তবে খারাপ লাগেনি। মনে হয়েছে, আমার লেখাগুলোকে আরও ভালো করতে হবে। আগামী বছর পুরস্কার পাওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে।
জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা। এমন আয়োজন বন্ধুদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। এই উৎসব প্রতিবছর করা হোক, সেই কামনা।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বগুড়া বন্ধুসভা