সত্যজিৎ রায়ের নাম শোনেনি, এমন কেউ কি আছে? অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। তখন তাঁর বয়স মাত্র তিন বছর। ঠাকুরদাদার তৈরি ছাপাখানায় বই ছাপানো হতো। দুজন কাকা আর কয়েকজন কাজের লোক বই ছাপানোর কাজ করতেন। অক্ষরের পর অক্ষর বসিয়ে শব্দ-বাক্য তৈরি করে কাগজে ছাপ মারার কাজ। শিশু সত্যজিৎ সব অবাক হয়ে দেখতেন। কখনো কখনো ঠাকুরমার সঙ্গে অক্ষর ও ছবির ব্লক বাছাই করে ঝেড়েমুছে আলাদা আলাদা ঝুড়িতে রাখতেন।
সত্যজিৎ রায়দের বাসার পাশেই একটি স্কুল ছিল। বাসায় বসে স্কুল থেকে শিশুদের গণিতের নামতা পড়া শোনা যেত, মাস্টারদের ধমকানি শোনা যেত। সত্যজিৎ ঘরে বসেই স্কুলের শিশুদের সঙ্গে সুর মেলাতেন। এভাবেই তাঁর নামতা শেখা হয়ে যায়।
সত্যজিতের এক ঠাকুরদা চমৎকার ছবি আঁকতেন। বইয়ের প্রচ্ছদ ও ভেতরের গল্প বা কবিতার সঙ্গে মিলিয়ে ছবি। সত্যজিৎ সেগুলো দেখে দেখে ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
বয়স একটু বাড়লে মা সত্যজিৎকে ভর্তি করিয়ে দেন রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে। সেখানে তিনি শিল্পকলা বিষয়ে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি শুরু করেন বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকা। দাদার মতো বইয়ের পাতায় পাতায় ছবি আঁকাও শুরু হলো। শুরু করলেন গল্প ও উপন্যাস লেখা; ‘ফেলুদা’ ও ‘প্রফেসর শঙ্কু’র মতো কালজয়ী চরিত্র।
পড়াশোনা শেষে একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ কোম্পানিতে তাঁর চাকরি হয়। পরবর্তীকালে তিনি সিনেমা তৈরিতে মন দেন। ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপুর সংসার’সহ আরও কত চলচ্চিত্র। তিনিই একমাত্র বাঙালি চলচ্চিত্র নির্মাতা, যিনি অস্কার জিতেছিলেন।
হারুয়া, কিশোরগঞ্জ