ইন্টারনেট প্রজন্মের সম্পর্কের ভাঙাগড়ার গল্প ‘সময় সব জানে’

‘সময় সব জানে’ কাহিনিচিত্রের একটি দৃশ্যে তানজিম সাইয়ারা তটিনী ও শাশ্বত দত্তছবি: সংগৃহীত
এই কাহিনিচিত্রে আছে উড়ন্ত হাসির বসন্ত বাহার, আছে মনমরা রৌদ্রদগ্ধ দিন, আছে মনের মেঘের গুমোট ভাবের বজ্রপাত, আছে ঝরঝর বরষার ধারার মতো প্রেম, শীতের হিমেল রাতের মতো স্নিগ্ধ আবেশ ছড়ানো মুগ্ধতা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে,/ কে কোথা ধরা পড়ে, কে জানে...’। রবীন্দ্রনাথের সময়ে অন্তর্জাল ছিল না। তবে অন্তরের জাল পাতা ছিল ভুবনময়। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে পারস্পরিক মেলামেশা এতটা ছিল না। কাউকে প্রথম দেখে, দূর থেকে দেখে, দূর থেকে কারও মুখে কারও কথা শুনে প্রেমে পড়ার আকুলি-বিকুলি, বিরহ, বিরহ দংশন ছিল। মানুষমাত্রই প্রেমিক। পৃথিবীতে কোনো কালে, কোনো সময়েই প্রেমে পড়া বারণ ছিল না। প্রেমপত্র লেখার প্রচলন ছিল। মনের মাধুরী, অন্তরের ব্যাকুলতাদগ্ধ যন্ত্রণা মিশিয়ে প্রেমপত্র লিখে, দূত-দূতী বা অন্য কোনো মাধ্যমে পত্র পাঠিয়ে উত্তরের আশায় আকুল প্রতীক্ষা করে থাকার নামও ছিল সময়। এখন স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা অনেক বেশি স্মার্ট, আধুনিক। এখন আর প্রেমপত্র লিখে অপেক্ষা করতে হয় না। মনের যেকোনো বিরহ, যন্ত্রণা, দংশনে বোতাম টিপে হাত বাড়ালেই সত্বর বন্ধুর হাত পাওয়া যায়। মনে ধরা মানুষকে প্রেম নিবেদন করা সহজ, সে গ্রহণ করবে কি করবে না, উত্তর পেয়ে বা না-পেয়ে, তা-ও বুঝে যাওয়া সহজ। একই সঙ্গে সবচেয়ে কঠিন মনের মতো বন্ধু বা প্রেমিক খুঁজে পাওয়া।

পৃথিবীতে নিষ্কাম প্রেমও থাকে। সেই প্রেম মহান পুরুষ-নারীদের জন্য। আবার খাঁটি বিশুদ্ধ প্রেমেরও অঙ্গ পবিত্র কাম। কামের এই পবিত্রতা কে কতটা ধরে রাখতে পারে, তার ওপর নির্ভর করে সম্পর্কের বনিবনা। শুধু কামের লাগি প্রেম চাহিলে প্রেম মেলে না। অন্তরের গহিন পথের রসধারা শুকিয়ে যায়। আমাদের এই সময়ে এসে প্রেমও হয়ে উঠেছে একটা বড় শাড়ির দোকানের মতো। নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রাম শহরে আমার কৈশোর যাপনে ‘ডিফারেন্ট টার্চ’ নামের দলটির গান আমরাও সরবে নীরবে গুনগুন করতাম। ‘মন কি যে চায় বলো/ যারে দেখি লাগে ভালো/ মন সে তো বাধা পড়ে না/ কী জানি কেন জানি না...’। শাড়ির দোকানে গিয়ে একের থেকে এক সুন্দর শাড়ি দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়।

পুরুষের পক্ষে তো মনের সঙ্গে মন মিলিয়ে শাড়ি কেনা প্রায় অসম্ভব। আবার জীবনে ধৈর্যের পরীক্ষা শিখতে হলে নারীর সঙ্গে শাড়ির দোকানে গিয়ে দেখতে হয়। দোকানি যত রকমের শাড়ি খুলে মেলে দেখাক, কিছুতেই তাঁদের পছন্দ হয় না। বর্তমানের এই চটজলদি সময়ে এসে প্রেমকে তাই ফুচকা, চুড়মুড়, পপকর্নের মতো ভাবতে শুরু করলে, বারবার ঠকতে হয়। রংবাহারি সময়ে মনের রঙের সঙ্গে রং মিলিয়ে মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া, সে বড় কঠিন বিষয়। মনের মানুষিকে তো আর কুমোরটুলিতে বানিয়ে নেওয়া যায় না।

নিত্যনতুন বিজ্ঞাপনের কারিগর সাকিব ফাহাদ সীমিতদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র নির্মাণ করতে এসে এই সময়ের মনের নির্মাণ-বিনির্মাণ, সম্পর্কের ভাঙাগড়ার খেলাগুলোকে তুলে আনলেন। আমরা যেভাবে কথা বলি, অবিকল সেই কথাগুলোই হয়ে উঠল কাহিনির সংলাপ। আবার এখনকার বিজ্ঞাপনের ভাষাও আলো-আঁধারিতে, রূপক-উপমায় উজ্জ্বলতর। সাকিবের কাহিনিচিত্রের সংলাপও তেমনই। যেমন পশ্চিমবঙ্গে এইচআইভি/এইডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনে ‘লুডু খেলা’ শব্দটা ব্যবহার করা হতো; সেই লুডু খেলা সাকিবের চরিত্রের মুখে হলো ‘হাডুডু’।

এই কাহিনিচিত্রে আছে উড়ন্ত হাসির বসন্ত বাহার, আছে মনমরা রৌদ্রদগ্ধ দিন, আছে মনের মেঘের গুমোট ভাবের বজ্রপাত, আছে ঝরঝর বরষার ধারার মতো প্রেম, শীতের হিমেল রাতের মতো স্নিগ্ধ আবেশ ছড়ানো মুগ্ধতা। মনের রংধনু মেলা কবিতার মতো সুন্দর। তবে বাস্তবের ঘটনার ঘনঘটার অসাধারণ একটি গল্প চিত্রনাট্য দাঁড় করিয়ে আমাদের চমকে দিয়েছেন অন্য এক কান্ডারি মৌমিতা হুসেইন। ছোটগল্পের সংজ্ঞার মতো গল্পটা ছোট হলেও এর বহর এবং বিস্তার অনেক বড়। তীব্র অনুরণন সৃষ্টি করে শেষ হয়েও হয় না যে শেষ।

ইরার সঙ্গে সম্পর্কে ছিল আদিল। চট্টগ্রামে গিয়ে দুজনের মধ্যে সুরক্ষাহীন শারীরিক সম্পর্ক হয়। পুরুষেরা যেভাবে এ ধরনের শারীরিক সম্পর্ক চায় এবং নারীকে বাধ্য হয়ে সংযম হারাতে হয়, এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। কিন্তু মুহূর্তের আবেগ-অনুভূতি উত্তেজনার বশে ঘটে যায় যদি বেশি কিছু, নারীকেই তো নিতে হবে তার দায়ভার। হঠাৎ ইরার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেল। আদিল এবার নানাভাবে এড়িয়ে যেতে চায় বান্ধবীকে।

উদ্বাস্তু পরিবারের অভাবের জন্য হঠাৎ পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে আমি পশ্চিমবঙ্গের একটি স্বাস্থ্যবিষয়ক কাগজে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেছি। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিসেস ডক্টরস নামের একটা সংগঠনের হিরোশিমা-নাগাসাকি যুদ্ধবিরোধী দিবস পালনের উৎসবে গিয়ে আলাপ হয়েছিল বিশিষ্ট চিকিৎসক কাজল কৃষ্ণ বণিকের সঙ্গে। পরবর্তী সময়ে তিনি যখন কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজের দায়িত্ব নিয়ে এলেন, একবার আমি মেয়েদের ঋতুচক্র, অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ওপরে একটা সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তিনি যেসব মূল্যবান কথা বলেছিলেন, তার মধ্য থেকে বেছে নিয়ে শিরোনাম করেছিলাম, ‘পিরিয়ড বন্ধ হওয়া মানেই গর্ভবতী হয়েছে, মনে করাটা ঠিক নয়’।

আসলে অনেক মেয়ে ঠিক এই ভয়টাই পায়। কিন্তু পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার বা অনিয়মিত হওয়ার অনেক কারণ থাকে। এখানে ইরারও ঠিক তা-ই হয়েছে। এই আশঙ্কা থেকে তীব্র ভয়, এমনকি সুইসাইড করার মতো মনের অবস্থাও তৈরি হয়ে যায়। ঠিক সে রকম একটা মুহূর্তে তার পাশে এসে দাঁড়ায় অন্য এক বন্ধু রাহাত।

রাহাতকে অনেকে ‘চরিত্রহীন’, বাজে ছেলে বলে জানে, একাধিক বান্ধবীর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে বলে। বাস্তবে সে সৃষ্টিশীল মানসিকতার, চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে সুইডেন ফিল্ম স্কুলে যাবে। ‘হাডুডু’ খেলার বিষয়েও অবশ্য মন সব সময় উড়ু উড়ু, উল্লাসে মশগুল। মজা-মশকরা সব সময় তো আর মজা থাকে না, হয়ে যায় ভীষণ ভয়ংকর মজা। সেই হাডুডু খেলার পরবর্তী সময়ে হঠাৎ যখন বিপর্যয় নেমে এল, আদিল ফুটে গেল, আদিলের ফেসবুক স্ট্যাটাস হঠাৎ পাল্টে হয়ে গেল ‘ইট ইজ কমপ্লিকেটেড’, রাহাত হয়ে উঠল ইরার সবচেয়ে বড় আশ্রয়।

সে ইরাকে বোঝায়, ২০২৩ সালে ১২০টা প্রবলেম আছে, এটা কোনো সমস্যাই নয় সুইসাইড করার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাস্তব বোধসম্পন্ন সে ইরার জন্য প্রেগনেন্সি কিট এনে দেয়। মুঠোফোনে সারাক্ষণ যোগাযোগ রাখে। এ অবস্থায় যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল। ছন্নছাড়া দশা মনের টালমাটাল যুদ্ধে অশান্ত ইরা ভোরের বদলে অন্য সময়ে কিট দিয়ে পরীক্ষা করে। ফলাফল তাকে নিরাশ করে। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়। ভোরে পরীক্ষা করেও ভালো ইঙ্গিত পায় না। তখন মনে হতে থাকে এই শরীর, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সবই তার; কিন্তু কিছুই যেন তার নয়। আদিল সব ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। মুহূর্তের জন্য এত বড় বিপদ ঘটে যাবে, প্রস্তুত ছিল না জীবন।

রাহাত এবার ইরাকে প্রসূতি সেবাকেন্দ্র, স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বে আছেন ডা. হাসিনা রহমান, যিনি আদিলের মা। ইরা, রাহাত সবাইকে তিনি চেনেন। ইরার সঙ্গে ছেলের সম্পর্কের কথাও জানতেন। শহরের সব গাইনি ডাক্তার আদিলের মা এবং আদিলকে চেনে, এই ভয়ে আদিল ইরাকে কোনো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে চায়নি।

হাসিতে জগৎ জয় করা তটিনী এমনিতেই আলোকোজ্জ্বল। এই কাহিনিচিত্রে সেই তটিনীর মুখে আমরা দেখলাম ঘন বিষাদের ছায়া, বজ্রাহত ভাঙা আয়নার মতো টুকরো টুকরো ভাঙা মুখ, মুখের অভিব্যক্তি।

যার কাছে পরিষেবা নিতে এসেছে, শহুরে আধুনিক তেমন একজন প্রগতিশীল ধারার মানুষের কথাবার্তাও ইরার ভালো লাগে না। আদিলের মা সব দোষ ইরার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চায়। ইরাকে বলেন, ‘একটা মেয়ে চাইলে একটা ছেলেকে গাইড করতে পারে, আবার এ রকম উটকো ঝামেলা দিয়ে ফাঁসাতেও পারে…।’

ইরাকে প্রাথমিক দেখে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখে দেন। সেগুলো রিপোর্ট নিয়ে আবার আসতে বলেন। ইরাকে বাইরে এগিয়ে দেওয়ার সময় সঙ্গে রাহাতকে দেখতে পান। খুব চটে গিয়ে বলে ওঠেন, ‘কাকে কী শেয়ার করতে হয়, তা-ও জানো না! রাহাত একটা বাজে ছেলে, যার তার সঙ্গে ঘোরাঘুরি বন্ধ করো। আদিল একটা ছেলে, তুমি একটা মেয়ে, নিজের সম্মানের দিকে নজর দাও।’ এবার বুক ঠুকে দাঁড়ায় ইরা, বন্ধু আদিলের চিকিৎসক মায়ের মুখের ওপর শক্ত করে জবাব ঠুকে দেয়, ‘চোখ আমার একদম খুলে গেছে, চোখের পাওয়ারের সঙ্গে নিজের স্ট্যান্ডার্ডও বেড়ে গেছে।’

ওদিকে দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতে গিয়ে রাহাত আসলে মনেপ্রাণে ইরাকে ভালোবেসে ফেলেছে। ইরার জন্য সে বাইরে কোথাও না যেতেও প্রস্তুত। ইরাকে সে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। রাহাতের মাসহ এই বাড়ির সবাই আদিলদের মতো সমাজে উচ্চশিক্ষিত, উচ্চপ্রতিষ্ঠিত নয়; কিন্তু হাসিখুশি যথেষ্ট মুক্ত মনের, স্বাধীন পরিবেশে আনন্দে মুখর। ইরাকেও তারা মুহূর্তের মধ্যে আপন করে নেয়। রাহাতের ঘরে গিয়ে দেখে একজন উঠতি পরিচালকের এ যেন এক স্বপ্নসাধনার শিল্পঘর।

রাহাতের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ইরা তবু নতুন সম্পর্ক থেকে দূরে থাকতে চায়। কিন্তু মনে মনে সে-ও ভালোবেসে ফেলেছে রাহাতকে। বহু জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। রাহাতের মায়ের মুখে শোনা মূল্যবান কথাটা ইরার মনে পড়ে, ‘আজকের করা ভুল তোমাকে ভবিষ্যতের তুমি বানাবে…।’ জীবনের বড় ঝড়ঝঞ্ঝা সামলে উঠে ইরা যেন আজ সত্যিকারের ‘তুমি’ হয়ে ওঠার পথে। আর ভুল নয়, তাকে এবার নিজের আত্মপরিচয় তৈরি করতে হবে। রাহাত নিজের সবকিছু ইরার কাছে সঁপে দেবে বলে এসেছিল। ইরা রাহাতের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে, নিজেকে সামলে নিয়ে রাহাতকে ফিরিয়ে দেয়। রাহাত বিদেশে পাড়ি দেয়।

নিজের মনে মনে একা হয়ে যেতে থাকা ইরার কাছে রাহাতের ফোন আসে। দুজনই বুঝে গেছে, কাউকে ছাড়া কারও চলছে না। ভিডিও কলে রাহাতের প্রেম নিবেদন ইরা বুক পেতে নেয়। দুচোখে তখন ভালোবাসার অশ্রু, বিরহ-বেদনার মধ্যেও দুকূল ছাপানো হাসি। কেউ কারও জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নয়। অতটা কঠিন না হয়ে সময়টাকে সহজ করে নিয়ে দুজনে শুধু দুজনের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে প্রস্তুত।

তানজিম সাইয়ারা তটিনীর মতো ইরা না থাকলে এই নদীর বাঁক, প্রতিবাক জলতরঙ্গের স্পন্দন বোঝা যেত না। পদ্মপাতায় শিশিরের ফোটাকে মুক্তার মতো মনে হতো না। হাসিতে জগৎ জয় করা তটিনী এমনিতেই আলোকোজ্জ্বল। এই কাহিনিচিত্রে সেই তটিনীর মুখে আমরা দেখলাম ঘন বিষাদের ছায়া, বজ্রাহত ভাঙা আয়নার মতো টুকরো টুকরো ভাঙা মুখ, মুখের অভিব্যক্তি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের গালে নিজেকে চড় মারে, এ দৃশ্য অসাধারণ। আমরা দেখলাম তার গুমরে গুমরে ওঠা মোমবাতির শিখার কম্পনের মতো আর্তনাদ, ক্রন্দন। দেখলাম চোখের পাতায় ঝরে পড়া রাগ কিংবা কুসুমিত ফুলকি। একটা সুন্দর মুখকে এ রকমভাবে দেখে আমাদের কষ্ট হয় বলেই সেটা শিল্প। সেই শিল্পী ক্ষমতা রাখেন প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের মনকে ধরে রাখতে। পল-অনুপলে জাগিয়ে রাখতে। শেষে আবার ফিরে আসে সেই জগৎ-মাতানো হাসি। যেন মেঘের পরে বৃষ্টি, রোদ-বৃষ্টি-মেঘ চক্রাকার জীবনের খেলা। নামটাই তো তটিনী, নদীর মতো সে বয়ে যাক।

রাহাত চরিত্রে শাশ্বত দত্ত অতুলনীয়। ব্যাট হাতে মাঠে নেমে বাউন্ডারি পার করার ক্ষমতা সে রাখে। ধরে খেলুন, নটআউট একজন তরুণ প্রতিভা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে মাতিয়ে রাখবে। মেয়েদের মন জয় করার জন্যও এমন ক্যাম্পাস-মাতানো ছাত্র আবার সহজ-সরল, সাদাসিধে পাড়ার ছেলেটির মতো অভিনেতা যথেষ্ট। আদিল চরিত্রে আহমেদ সার্জিলও ভালো। গানগুলো মনে থাকার মতো। ক্যামেরার ভাষা অনবদ্য।

সাকিব ফাহাদ সময়ের খড়কুটোকেও বিজ্ঞাপনের মতো ঝকঝকে-তকতকে উজ্জ্বল করে তুলতে পারেন। আশা করি, একটা সময় আসবে, তার নামের ছবির জন্য আর কোনো বিজ্ঞাপনের প্রয়োজন হবে না।

হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত