পুরস্কার স্বীকৃতি দেয়। আর স্বীকৃতি সব সময় আনন্দের। পাশাপাশি দীর্ঘদিন দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে, সেই দায়িত্ব বাড়ায়। তবে পুরস্কারই সব না। ভালো কাজ করে যাওয়াটাই আসল কথা।
গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রথম আলো বন্ধুসভার ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যখন মঞ্চে উঠে সেরা বন্ধুসভার স্বীকৃতি হাতে নিই, বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল সিলেট বন্ধুসভার বন্ধুদের মুখগুলো; যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং পরোপকারী মনোভাবের জন্যই বিশাল এই আয়োজনে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছি। সিলেট বন্ধুসভার বন্ধুরা সর্বদাই চেষ্টা করে নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখার।
এই তো সেদিন, প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘একটি ভালো কাজের’ অংশ হিসেবে সিলেটের লাক্কাতুরা চা-বাগানের শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য একটি পাঠাগার স্থাপন করে সিলেট বন্ধুসভা। যাতে সেখানের মানুষ বইয়ের আলোয় আলোকিত হতে পারে। সেখানকার অধিকাংশ মানুষই চা-শ্রমিক। আয়রোজগারও খুবই সামান্য। যা দিয়ে দুই বেলা ঠিকমতো ভাত খেতে পারাটাই অনেক কষ্টসাধ্য। ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবইয়ের বাইরের বই পড়াটা একধরনের বিলাসিতা। তারও কিছুদিন আগে অন্য আরেকটি চা-বাগানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের ব্যবস্থা করি এবং কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে একটি সেমিনার করি। বন্ধুসভার পক্ষ থেকে কিশোরী এবং নারীদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিনও বিতরণ করা হয়।
বছরের বিভিন্ন সময়ে বন্ধুরা নিম্ন আয়ের মানুষদের পাশে থেকে তাঁদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করার চেষ্টা করি। বন্যার সময় ত্রাণ বিতরণ, ঈদ ও দুর্গাপূজার সময় শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নতুন পোশাক উপহার দেওয়া অন্যতম।
এ ছাড়া সিলেট বন্ধুসভা এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দশমবারের মতো ১৫ দিনব্যাপী বইমেলা করেছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রোবোটিকস কর্মশালা করেছে। পাশাপাশি জিপিএ–৫ কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা, বিজ্ঞান উৎসব, গণিত উৎসব, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ফিজিক্স অলিম্পিয়াড, কৈশোর ও যুব প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক কর্মশালাসহ অসংখ্য কাজ করেছে।
যাহোক, পুরস্কার আমাদের কাজের স্বীকৃতিমাত্র। সিলেট বন্ধুসভা অতীতে যেমন দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করে গিয়েছে, ভবিষ্যতেও নিরঙ্কুশ কাজ করে যাবে।
সভাপতি, সিলেট বন্ধুসভা