খুব ছোটবেলায় যখন বানান করে নিজে নিজেই পড়তে শিখলাম, তখন থেকেই শুরু হলো বই পড়ার নেশা। পাঠ্যবই ছাড়াও হাতের কাছে যত রকমের বই পেতাম, কালবিলম্ব না করে পড়া শুরু করতাম।
তখন মুঠোফোন ছিল না, গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। কেরোসিনের কুপি বাতির রহস্যময় আলোয় মুগ্ধ হয়ে পড়তাম। পড়ার নেশায় নাওয়া–খাওয়া ভুলে যেতাম। মা বলতেন, ‘বইয়ের ভেতর কী এমন আছে যে দুনিয়ার সবকিছু ভুলে পড়ার মধ্যে থাকিস? পড়তে পড়তে একা একাই হেসে উঠিস, আবার দেখি কেঁদে ফেলিস।’
মাকে শোনাতাম মজার মজার সব গল্প। মা মুগ্ধ হয়ে শুনত। তখনকার দিনে হাতের কাছে সহজে গল্পের বই পাওয়া যেত না। বন্ধুদের বাডিতে বই খুঁজতাম, ধার নিয়ে পড়তাম। মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নতুন বই কিনে মনের অদম্য পিপাসা মিটাতাম। এ পিপাসা কখনো শেষ হওয়ার নয়।
ঠাঁকুরমার ভূতের গল্প, রাজা–বাদশাহর গল্প, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পগুচ্ছ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোটদের নিয়ে যত গল্প আছে, সবই পড়ে ফেলি স্কুলজীবনেই। কী যে আনন্দ পেতাম বই পড়ে, তা লিখে বুঝানো যাবে না।
জ্যেষ্ঠ শিক্ষক, দনারাম উচ্চবিদ্যালয়, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট