জীবনে যখন সব দিক থেকে ঘনিয়ে এল অন্ধকার, তখন একমাত্র আলো হয়ে রইলেন আমার মা। বাবার হঠাৎ ব্লক ধরা পড়ে, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন, চাকরিও চলে গেল। হাসপাতালে ভর্তি করার পর একে একে সবাই দূরে সরে গেলেন—আত্মীয়স্বজন; যাঁদের ভরসা করেছিলাম, তাঁরাও।
তখন মা একাই দাঁড়ালেন আমাদের সামনে পাহাড়ের মতো। চোখে কোনো অশ্রু নেই, কণ্ঠে কোনো অভিযোগ নেই। শুধু একটাই কথা, ‘তোমরা পড়াশোনা করে যাও, আমি আছি।’
আমরা তিন ভাই–বোন। প্রতি মাসে পড়ার খরচ, বাবার ওষুধ, খাবার, বাড়িভাড়া—সবকিছুর ভার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন মা। সকালে রান্না, দুপুরে টিউশনি, রাতে সেলাই—এভাবেই চলতে লাগল জীবন।
অনেকেই বলতেন, ‘তোমার মা এত কষ্ট করে টিকতে পারবেন না।’ কিন্তু তাঁরা জানতেন না, আমার মা শুধুই একজন মা নন; তিনি একজন যোদ্ধা। তাঁর হাতে নেই সোনা, কিন্তু তাঁর হৃদয়ে আছে অগাধ ভালোবাসা আর অসীম সাহস।
আজও যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ি, মায়ের মুখটা মনে পড়ে। সেই মুখ, যেটা কখনো ভেঙে পড়েনি, যেটা শুধু বলেছে—‘হাল ছেড়ো না।’
মা দিবসে আমি কিছু দিই না মাকে। শুধু একটা কথা বলি, ‘তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেরণা, মা।’