ভাসমান পেয়ারা বাজার ও নৌকার হাটে একদিন

ভাসমান পেয়ারা বাজার
ছবি: লেখক

পেয়ারা বেচাকেনার জন্য ঝালকাঠির ভিমরুলিতে জমে ওঠে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাসমান পেয়ারা বাজার। সারি সারি ভাসমান নৌকায় সবুজ–হলুদ পেয়ারার ছড়াছড়ি। ক্রেতা–বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত জায়গাটি। চাষিরা সরাসরি বাগান থেকে পেয়ারা পেড়ে বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন।
ভাসমান বাজার দেখে নৌকায় চড়ে পেয়ারা বাগান দেখার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ৩০০ টাকা ভাড়ায় দুই ঘণ্টার জন্য ছোট একটি ডিঙি নিলাম। পথে পেয়ারা-আমড়া নিয়ে বাজারে যাওয়ার বিভিন্ন নৌকা দেখলাম। ভিমরুলি বাজারের কাছাকাছি বাদুড় ও চামচিকার আবাস চোখে পড়ল। দেবেন্দু মাঝি জানালেন, এখানে রাতের বেলা বিভিন্ন পাখির কিচিরমিচির হয়। ছোট ছোট খাল পাড়ি দিয়ে পেয়ারা ও আমড়া বাগানে প্রবেশ করি। মাঝি তাঁর পরিচিত একজনের কাছ থেকে গাছের পেয়ারা পাড়ার অনুমিত নিয়ে নিলেন। বাগান থেকে পেয়ারা নিজ হাতে ছিঁড়ে খেতে দারুণ। নৌকা ভ্রমণ ও মাঝির সঙ্গে বিভিন্ন কথাবার্তায় দুই ঘণ্টা কখন যে কেটে গেল বুঝতেই পারিনি।

নৌকা হাট

পেয়ারার ভাসমান বাজারের ব্রিজ থেকে সামান্য হেঁটে ও পরে অটোরিকশায় কুড়িয়ানা আসি। স্কুলসংলগ্ন বাজার থেকে আটঘরের নৌকা হাটের দিকে রওনা দিলাম। অটোরিকশায় যেতে যেতে ভাসমান সবজি বাজারে নজর আটকে গেল। ভাসমান নৌকায় সবজি কেনাবেচা চলছে। আরও পাঁচ-ছয় কিলোমিটার যেতেই সারি সারি নৌকা চোখে পড়ে। এটাই আটঘরের নৌকা হাট। একটু দূরে ছোট্ট বাজার। প্রতি শুক্রবার নৌকার হাট বসে। প্রতিটি নৌকা ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বেশির ভাগই ডিঙি বা ছোট। ক্রেতারা নৌকা কিনে যন্ত্রযানে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ বৈঠা বেয়েও নিয়ে যান।

নৌকার হাটে সাজানো সারি সারি নৌকা
ছবি: লেখক

যাতায়াত

বরিশাল চৌরাস্তা থেকে নবগ্রাম রোড ধরে আটঘর। অথবা লথুল্লা বাসস্ট্যান্ড থেকে বানারিপাড়ার একটু আগেই রায়েরহাট নেমে যেতে হবে। এরপর অটোরিকশায় কুড়িয়ানা ব্রিজ পর্যন্ত। ব্রিজ পার হয়ে কুড়িয়ানা স্কুলসংলগ্ন বাজার থেকে ভিমরুলি বা আটঘর যাওয়া যায়। আটঘর থেকে কুড়িয়ানা। কুড়িয়ানা থেকে অটোরিকশা ধরে সামান্য হেঁটে ভিমরুলি বাজার। ঝালকাঠি শহর থেকে ১৬-১৭ কিলোমিটার দূরের এ বাজার। সিএনজি ও অটোরিকশায় যাওয়া যায়।

থাকা-খাওয়া

কুড়িয়ানা, আটঘর বা ভিমরুলি বাজারসংলগ্ন এলাকায় ছোট ছোট খাবার হোটেল পাওয়া যাবে। দেশি মাছে রসনাতৃপ্তি ভালো হবে। আরামে থাকার জন্য ঝালকাঠি, স্বরূপপুর বা বরিশালের যেকোনো একটি স্থান বেছে নিতে পারেন। এসব জায়গায় পছন্দমতো বাজেটে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।

লেখক পরিচিতি: উপপরিচালক (বিআরডিবি), সাতক্ষীরা