প্রিয় কাঠবিড়ালি,
আশা করি ভালো আছ। দীর্ঘ বিরতির পর তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করার ইচ্ছাটা আর ধরে রাখতে পারলাম না। সমস্ত দ্বিধা-সংকোচ আর শত বাধা পেছনে ফেলে তোমাকে চিঠি লিখছি।
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। জানি, হয়তো বিস্মিত হবে কিংবা বিরক্ত—তবু লিখছি। খুব জানতে ইচ্ছা করে তোমার মনের খবর। অনেক দিন ধরে ভাবছি, এত দিন পেরিয়ে গেলেও তোমার মনে কি আমার জন্য কোনো অনুভূতির রেখা জেগেছিল? হয়তো না।
যখন থেকে বুঝতে পেরেছিলাম, তোমার বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছি; নিজের মনকে বুঝিয়ে চুপ হয়ে যাই। তোমার প্রতি আমার অনুভূতি ছিল একপক্ষীয়। তুমি কখনো আমাকে সে চোখে দেখোনি। তবু অজান্তেই তোমাকে বিরক্ত করে গেছি।
তোমাকে প্রথম দেখার সেই মুহূর্তটা আজও চোখে ভাসে। তোমার কি মনে আছে, যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম, সেদিনই তোমার নাম দিয়েছিলাম কাঠবিড়ালি! কাঠবিড়ালির মতো খাওয়ার অভ্যাস, চোখের ভেতর সেই অপার মায়া—সবকিছু আজও মনে পড়ে।
তোমার সঙ্গে দেখা হওয়ার স্মৃতিগুলো আমাকে খুব তাড়ায়। তোমার কি মনে আছে, তোমাকে নিয়ে অগোছালো কবিতা লিখতাম। কবিতাগুলো হয়তো শিল্পগুণে পূর্ণ ছিল না, কিন্তু অনুভবের গভীরতায় তুমি ছিলে সর্বত্র। কবিতায় তোমাকে চাঁদের সঙ্গে তুলনা করতাম। তুমি চাঁদের মতো জ্বলে উঠতে, জ্যোৎস্নার আলো ছড়িয়ে দিতে। এখনো চাঁদের দিকে তাকালে তোমার কথা মনে পড়ে। চাঁদের মতোই ধরাছোঁয়ার বাইরে তুমি। তোমার হরিণীচোখের মায়ায় সেই যে ডুবেছিলাম, আজও সেখান থেকে উঠতে পারিনি। উঠব কীভাবে? তোমার চোখের মায়ায় যে আমি আবদ্ধ।
তোমাকে দেখার জন্য কত অজুহাত বানাতাম। শুধু একঝলক তোমাকে দেখার জন্য, একবার তোমার চোখে চোখ রাখার জন্য। আজ কত দিন হয়ে গেল, তোমার মুখটা দেখি না। অনেক জানতে ইচ্ছা হয়, আমার এতশত বাহানা তোমাকে কি কখনো ভাবায়নি?
এখনো রোজ তোমার ছবি দেখি। তোমার হাসিমুখ দেখলে আমার মন ভালো হয়ে যায়। এখন স্মৃতিগুলোর মধ্যেই খুঁজি তোমাকে। হয়তো সেগুলোই এখন আমার একমাত্র আশ্রয়। খুব ইচ্ছা হয়, তোমাকে মেসেজ দিই, কথা বলি। কিন্তু নিজেকে থামিয়ে দিয়েছি—অজানা কারণে। তোমাকে বিরক্ত করতে চাই না। হয়তো এটাই আমার লেখা শেষ চিঠি।
তোমার জীবনে অনেক সুন্দর মুহূর্ত আসুক। প্রতিটি সিদ্ধান্তে সফলতা ছুঁয়ে যাক। তোমার মনের মধ্যে একটু খুঁজে দেখো, আমার জন্য তোমার মনে এত দিন পর কোনো অনুভূতি জেগেছে কি না। তুমি যদি একটু থেমে আমার কথা ভাবো, জানবে—আমি ছিলাম, আছি, থাকব তোমার অপেক্ষায়।
ভালো থেকো কাঠবিড়ালি।
ইতি,
তোমার সিয়াম
বন্ধু, জামালপুর বন্ধুসভা