আমার মা যেন ছায়াবৃক্ষ

মায়ের সঙ্গে লেখকছবি: সংগৃহীত

অস্তিত্বহীন মাংসপিণ্ড থেকে পূর্ণাঙ্গ মানবগঠনে অমূল্য যে সত্তার ভূমিকা অনন্য, তিনিই হলেন মা। যাপিত জীবনে মূল্য নির্ধারণে যিনি অনির্ণেয়। কথার উপমা, ভাষায় অলংকার কম পড়ে যার কাছে, তিনি হলেন আমার মা নূর আক্তার বেগম। আনোয়ারা বেলচূড়া গ্রামের চৌধুরানী জমিদার বাড়ির সন্তান হয়েও শ্বশুড়বাড়িতে এসে কত না জীবন সংগ্রাম করে ছায়াবৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে গেলেন। জীবনে চলার পথে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস সামাজিক জঞ্জাল, বাধাবিপত্তি—কোনোকিছুই আপনাকে থামিয়ে দিতে পারেনি। আমার মা বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চট্টগ্রামের পটিয়া আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত।

জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তোমার উপস্থিতি আতিশয্য পাওনা আমার। সমস্ত প্রতিকূলতা থেকে আমিত্বকে বাঁচিয়ে রেখে সগৌরবে আজও ছায়াবৃক্ষেরন্যায় আছ আমাদের জীবনে। যেখান থেকে আমরা বাঁচার জন্য অক্সিজেন পাই, ক্লান্তি আর জীবনের ছন্দপতনে এগিয়ে চলার প্রেরণা পাই। ছায়াবৃক্ষ রোদ-জলে নিজেকে শোষিত করে আমাদের সজীব প্রাণবন্ত রাখে সব সময়। জীবনের যতটুকু অর্জন, সবই তোমার ত্যাগ, তিতীক্ষা আর ভালোবাসার ফল।

মা তুমি ছিলে আমরা তিন বোন ও একমাত্র ভাইয়ের বাতিঘর। মা খুব গর্ব হয় যখন গ্রামে সবাই বলে তুমি রত্নগর্ভা, আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর। তিন কন্যাকেও তোমার পথে হাঁটতে শিখিয়েছ। তিন কন্যাকেই সরকারি স্কুলের শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে অনুপ্রাণিত করলে। মওলা তোমার মনের প্রত্যাশা পূরণ করেছে। তোমার ছায়াবৃক্ষের দোয়ার বরকতে আমরা তিন বোন আজ স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তোমার একমাত্র ছেলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করছে।

প্রত্যেক সন্তানের কাছে নিজের মা যেন তার পৃথিবী। তারপরও কেন জানি মনে হয়, তুমি সবার চেয়ে আলাদা। স্বার্থহীন, উদার, ত্যাগী ও স্রষ্ঠার শ্রেষ্ঠ উপহার ছায়াবৃক্ষ আমার মা। মা তুমি কি জানো, আজ দিনটি শুধু তোমার জন্য। আমরা চাই, প্রতিদিন হোক মা দিবস। ভালোবাসি মা তোমাকে।

বন্ধু, পটিয়া বন্ধুসভা