আমাদের সমাজে মানবতা ও সহমর্মিতার গুরুত্ব অপরিসীম। আজকের আধুনিক পৃথিবীতে যেখানে প্রযুক্তি ও স্বার্থপরতা প্রায় সবকিছু ছাপিয়ে যাচ্ছে, সেখানে মানুষের আসল সত্তা হলো তার আন্তরিকতা, অপরের প্রতি যত্ন ও সদাচরণ। সমাজের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি সম্পর্কেই মানবিক মূল্যবোধের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
মানবতার মূলমন্ত্র হচ্ছে ‘মানুষ মানুষের জন্য’। যা শেখায়, আমরা যতই উন্নত হই না কেন; আমাদের আচরণ, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা মানুষের আসল পরিচয় বহন করে। তাই মানবিক মূল্যবোধ ও সদাচরণ আমাদের জীবনের সেরা গুণাবলি হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।
জীবনকে মানুষ দুবার অনুভব করতে পারে। এক মৃত্যুর সময়, আরেক জন্মের পর। দুবারের অনুভূতি দুই রকম। মৃত্যুর সময় সে আরও বাঁচতে চায়। শুধু তা–ই নয়, সে তার সব ভুল বুঝতে পারে। আর জন্মের পর সে তার ভুল নয়; বরং জীবনকে উপভোগ করতে থাকে। সেই উপভোগের মধ্যে লুকিয়ে থাকে সত্তা।
মানবজাতির ইতিহাসে সত্তা বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। এখানে মানবসত্তাকে নয়; বরং মনুষ্যত্ব বিকাশের যে অন্তরিণ অনুভূতি প্রকাশ করার বিলোপসাধন আছে, তার কথা বলতে চেয়েছি। মানুষ যদি ঈশ্বরকে জেনে ফেলে, তাহলে তার সত্তা বিলীন হয়ে যাবে। তখন থেকেই তারা অন্তরিণ অনুভূতি প্রকাশ করা শুরু করবে। কিন্তু তারা তাদের ঈশ্বরকে উপলব্ধি করতে পারেনি; উপলব্ধি করতে পেরেছে ঈশ্বরের সত্তাকে।
এই মহাজগতে আমাদের জন্য এক বিশাল খেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আমরা মানুষের সহানুভূতি নিয়ে খেলা করি। এই খেলা যে খেলেন, সে কেবল অনুভব করেন। আর অন্যরা সেটা ভোগ করেন। অন্যদিকে সমাজ আমাদের দাস বানিয়ে রেখেছে। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে প্রভাবিত করছে। সমাজের প্রচলিত ধারণা ও নিয়ম আমাদের বিবেককে বন্দী করে রেখেছে।
শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা