আমাদের ব্রেন কেন শপিং পছন্দ করে

‘এনে দে রেশমি চুড়ি, নইলে যাব বাপের বাড়ি’—গান বাজছে শপিং মলের সামনে। কাচের চুড়িসহ বিক্রি হচ্ছে হরেক রকম চুড়িছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

ছোটবেলায় শপিং বলতে বুঝতাম রোজার ঈদে নতুন জামাকাপড়, নতুন জুতা কেনা। বছরের অন্য সময় প্রয়োজন অনুযায়ী বাবা-মা কিনে দিতেন। কিন্তু রোজার ঈদের মতো সেই আনন্দ থাকত না। দিন বদলেছে, সময়ও। এখন নিজেরাই সব কেনাকাটা করি। বিশেষ কোনো উপলক্ষ লাগে না। ছোটবেলার মতো উচ্ছ্বাস না থাকলেও প্রতিবার যখন শপিং করতে যাওয়া হয়, একধরনের ভালো লাগা কাজ করে। অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই এমন অনুভূতি কাজ করে।

একটা সময় কেবল বিভিন্ন উৎসব ও দিবসকেন্দ্রিক শপিং জমজমাট হতো। এখন সারা বছরই জমজমাট থাকে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোয় বাজার ও শপিং মলগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। এই কাজটা মানুষকে আনন্দ দেয়। ব্রেনের যে রিওয়ার্ড সিস্টেম রয়েছে, সেটিকে তৃপ্তি দেয়।

রাজধানীতে শপিং মলগুলোতে এমন ভিড় সব সময় লেগে থাকে। নিউমার্কেট, ঢাকা
ফাইল ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল এবং বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের নিউরোসার্জারির অধ্যাপক ড. অ্যান-ক্রিস্টিন ডুহাইম বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য আমাদের কী কী প্রয়োজন, সেটির যে শিক্ষা আমরা পেয়েছি, তাই রিওয়ার্ড সিস্টেম। এটি কয়েক মিলিয়ন বছর আগে মানুষের মধ্যে গড়ে উঠেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো কিছু আমাদের আনন্দ দেয়, তাহলে বুঝতে হবে সেটি রিওয়ার্ড সিস্টেম যে কাজ করছে, তার ইঙ্গিত।’

যুক্তরাষ্ট্রের আসক্তি কেন্দ্রের জন্য চিকিৎসা বিষয়বস্তু পরিচালক আশিস বাট বলেন, জিনিসপত্র কিনলে ব্রেনে রাসায়নিক ডোপামিন সৃষ্টি হয়। ডোপামিনকে অনেক সময় ‘ভালো অনুভূতি’ নিউরোট্রান্সমিটার বলা হয়।

আবার অসংখ্য মানুষ নিজেদের আনন্দ দিতে শপিংয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করেন। ড. অ্যান-ক্রিস্টিন ডুহাইম বলেন, ‘শপিং কীভাবে আনন্দময় করতে হয়, বিক্রেতারা ভালো করেই জানে।’