মায়ের জন্য চিঠি
বাইরে থেকে যে মানুষটাকে সবার আগে খুঁজে বেড়াই, সে হলো মা। জানো আম্মু, তোমার শরীরের গন্ধটা নাকে এলে অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করে। জড়িয়ে ধরলে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শান্তি পাই। তোমার মনে আছে আম্মু, ছোটবেলায় স্কুলে তোমায় এক পলক না দেখলেই কান্না জুড়ে দিতাম; আর তুমি জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা!
স্কুল থেকে ফেরার পথে তোমার হাত শক্ত করে ধরে কতশত গল্প বলতাম, আর তুমি উৎসুক শ্রোতা হয়ে সব শুনতে। এখন আর বলা হয় না সেসব। রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে বাসায় ফিরি!
রাস্তার পাশে বুনো ফুল দেখে কত বায়না ধরেছি; তুমি নিঃসংকোচে সেগুলো কুড়িয়ে দিতে। বাড়ি ফেরার আগেই সেগুলো আঙুলের ফাঁকে নুইয়ে পড়ত। কিন্তু পরের দিন ফের একই বায়না আর তোমার প্রাণপণ চেষ্টা ফুল কুড়ানোর!
আস্তে আস্তে বড় হলাম। কতশত খারাপ দিন এল, সবাই একা করে দিল; কিন্তু তুমিই একমাত্র মানুষ, যে আমার হাত ছাড়ল না। এমনভাবে সব ঠিক করে দিলে যেন নতুন করে আমার জন্ম হলো। আবার নতুন করে হাসতে শুরু করলাম। শুধু তোমার জন্যই, আম্মু।
কত রাত তোমাকে হারানোর এক অজানা ভয়ে কুঁকড়ে গেছি, তোমার পাশে শুয়েই তুমি জানো না! এই যে লিখতে বসে হাত কাঁপছে, চোখ ভিজে আসছে, সেটাও তোমার থেকে লুকানোর কত চেষ্টা! এত সংকোচ কেন বলতে পারো? কখনো বলা হয়নি, ভালোবাসি আম্মু। খুব ইচ্ছা করে তোমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলি ‘ভালোবাসি’! হয়তো ভালোবাসার প্রকাশ আমার অভিধানে নেই। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, হাজার বছর বাঁচুক পৃথিবীর মায়েরা!
জেন্ডার ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা