আমরা তিন ভাই, তিন বোন। মা–বাবা ও দাদা-দাদি মিলে পরিবারের সদস্যসংখ্যা ১০। এত বড় সংসার চালাতে বাবার একার পক্ষে অনেক কষ্ট হয়েছিল। হিমশিম খেতেন। তবু কোনো দিন তিনি ক্লান্ত হননি। আমাদের চোখের দিকে চেয়ে সারা জীবন মাঠে-খেতে কাজ করেছেন, সমুদ্রে মাছ ধরেছেন।
প্রাইমারিতে পড়ার সময় স্যার ও সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করেছিল, আমার বাবা কী করেন? জবাবে বলেছিলাম, খেতখামারে কাজ করেন। বর্ষা কিংবা কুয়াশায় মোড়ানো শীতের দিন মাছ ধরেন সমুদ্রে। আমার কাছে বাবা একজন সমুদ্রবিজয়ী মানুষ।
ছোটবেলায় বাবাকে খুব কম সময় কাছে পেয়েছি। গ্রাম থেকে বহুদূরে শহরে পড়াশোনার ব্যস্ততার কারণে বাবার সঙ্গে তেমন কোনো স্মৃতি গড়ে ওঠেনি। তবে খুব মিস করতাম। প্রতি সপ্তাহ কিংবা মাসে তিনি টাকা পাঠাতেন আমার জন্য। কিন্তু টাকা কি বাবার ভালোবাসা এনে দিতে পারে?
মাদ্রাসায় পড়াকালীন সহপাঠী সবার বাবা আসতেন সন্তানদের দেখতে। কিন্তু আমার বাবা আসতে পারতেন না কাজের ব্যস্ততার কারণে। তাঁর সঙ্গে কথা হতো মুঠোফোনে। বড় হয়ে জানতে পারি, বাবাকে আমি যতটুকু ভালোবাসি তার চেয়েও শতগুণ আমাকে ভালোবাসেন তিনি।
কুতুবদিয়া, কক্সবাজার