দৈনন্দিন টেনশন আর স্ট্রেস: চাই মুক্তি
আধুনিক জীবনের অন্তহীন প্রতিযোগিতায় আমরা নিয়ত ছুটছি এক অসম্ভব অলীক সুখের পেছনে। শুধু চাই আর চাই। যত পাই, তত চাই। কোথাও নেই এর শেষ, নেই তৃপ্তি। ক্লান্তিহীন এ চাওয়ায় কোনো ক্ষান্তি নেই যেন। চাহিদা বাড়ছে অফুরান, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হরেক রকম টেনশন আর স্ট্রেস। স্ট্রেসহীন মানুষ খুঁজে পাওয়া এ যুগে দুষ্কর। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী থেকে করপোরেট জগতের বড় কর্তা—টেনশনে কমবেশি কাবু আজ প্রায় সবাই। টেনশনের ধরন প্রত্যেকের জীবনে ভিন্ন। যিনি ভুগছেন, তিনিই জানেন—কতটা দুঃসহ এ দহন। এর ফলে আক্রান্ত হচ্ছে আমাদের ব্যক্তিজীবন, পেশাজীবন, পারিবারিক জীবন এবং হুমকির মুখে পড়েছে প্রিয়জনদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কগুলো। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি নানাভাবে। সবচেয়ে বেশি দুর্যোগের সামনে আজ আমাদের স্বাস্থ্য শারীরিক-মানসিক দুই দিক থেকেই। অসহনীয় এ যন্ত্রণা থেকে চাই মুক্তি। চাই একটু প্রশান্তি।
মেডিটেশন তা-ই করে, আপনাকে প্রশান্তি দেয়। প্রতিদিন নানা কারণে যেমন পড়াশোনার চিন্তা, পরীক্ষাভীতি, ক্যারিয়ার ভাবনা, কর্মক্ষেত্রে অসহযোগী সহকর্মীসহ বিভিন্ন ধরনের জব স্ট্রেস, সম্পর্কের বিভিন্ন জটিলতা এবং আরও নানা ঘটনা আমাদের মনকে করে বিক্ষিপ্ত আর অশান্ত। ব্যাঘাত ঘটে মনোযোগে। ফলে কাজ আমরা করি বটে, কিন্তু মনোযোগের অভাবে পুরোপুরি তা নিখুঁত হয়ে ওঠে না ততটা। এই বিক্ষিপ্ত আর ইতস্তত ঘুরে বেড়ানো মনকে করে স্থির, স্বচ্ছ, প্রশান্ত করে মেডিটেশন। মনোযোগকে করে লক্ষ্যভেদী। বজায় রাখে আবেগীয় ভারসাম্য। ইতিবাচকতার অনুভূতি সৃষ্টি করে ভেতরে। ফলে সমস্যা পরিণত হয় না তীব্র সংকটে, বরং তা রূপ নেয় নতুন কোনো সম্ভাবনায়। জীবন এগিয়ে যায় এক প্রশান্ত গতিময়তার পথ ধরে।
নিমগ্ন হোন, ঘটবে আপনার অন্তর্জাগরণ
মেডিটেশন বা ধ্যান মানুষকে নিমগ্ন হতে শেখায়। তাকাতে শেখায় নিজের গভীরে। বিশাল সমুদ্রের গভীরে ডুব দিয়ে যেমন মুক্তা তুলে আনে ডুবুরি, মানুষের মনোজগৎও তা-ই। তেমনই এক কূলকিনারাহীন অনন্ত রহস্যময় পৃথিবী। মেডিটেশন সেই রহস্যদেশে ডুব দিতে শেখায়। দুর্লভ মণিমুক্তার মতো সে-ও আবিষ্কার করে তার সম্ভাবনা, তার সৃজনশীলতা আর সুপ্ত গুণাবলি। নিমগ্ন মুহূর্তে সে খুঁজে পায় তার সত্যিকারের লক্ষ্য আর আসল পথ। তাই ডুব দিন নিজের ভেতর। নিমগ্ন হোন। ঘটবে আপনার আত্মশক্তির জাগরণ। যাবতীয় টেনশন, অস্থিরতা, অশান্তি আর নেতিবাচকতার বৃত্ত ভেঙে আপনি জেগে উঠবেন নতুন শক্তি ও প্রেরণায়। হয়ে উঠবেন আত্মবিশ্বাসী ও ইতিবাচক। সফল মানুষের মতোই আপনিও বলে উঠবেন—যা চাই তা-ই পাব, আমি পারি আমি করব।
মেডিটেশনের নিমগ্নতা আপনাকে দিতে পারে নতুন নতুন আইডিয়া আর সমাধান। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও ম্যাসাচুসেটস হাসপাতালের মাইন্ড-বডি মেডিকেল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ডা. হার্বার্ট বেনসন। মেডিটেশন ও শিথিলায়নের মনোদৈহিক উপকারিতা এবং রোগ নিরাময়ে মেডিটেশনের ভূমিকা নিয়ে রচিত তাঁর সাড়াজাগানো রিলাক্সেশন রেসপন্স বইটি ১৯৭৫ সালে বেস্টসেলার হয়েছিল। সম্প্রতি ব্রেকআউট প্রিন্সিপাল নামে তিনি আরেকটি বইয়ে জানিয়েছেন, মনকে শিথিল করার মাধ্যমে একজন মানুষ তার মানসিক সামর্থ্যকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ দৈনন্দিন চিন্তাভাবনার জঞ্জাল এবং মাথা খারাপ করে ফেলা সমস্যার বাইরে এসে যদি ভাবা যায়, কিছুটা সময় যদি অন্য চিন্তায় ডুবে থাকা যায়, তাহলে চিন্তার রাজ্যে তৈরি হয় সেই স্বচ্ছতা আর স্থিরতা, যা দেয় সঠিক সিদ্ধান্ত ও সমাধান।
প্রফেসর হার্বার্ট বেনসনের ভাষায়, চিন্তাক্লিষ্ট মনটাকে যখন কিছুক্ষণের জন্য দূরে সরিয়ে রাখা যায়—হতে পারে তা কোনো স্ব-উদ্ভাবিত ব্যক্তিগত উপায়ে কিংবা মেডিটেশন ও শিথিলায়নের মতো কোনো পরীক্ষিত পদ্ধতিতে—তখন ব্রেনে ঘটে একধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন। যা একদিকে উদ্বেগজনিত ক্ষতিকর হরমোনের প্রভাবকে মোকাবিলা করে, অন্যদিকে ব্রেনে নিউরোট্রান্সমিটারের তৎপরতাকেও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে তৈরি হয় ভালো থাকার এক আনন্দদায়ক অনুভূতি। শুধু তা-ই নয়, ঝরনাধারার মতো সৃজনশীল ভাবনার স্ফুরণ কিংবা কঠিন সব সমস্যার ফলপ্রসূ সমাধান খুঁজে পাওয়ার অনুভূতিও মানুষ পেতে পারে সে সময়। তাই দৈনন্দিন কাজের বিরক্তি বা সমস্যার চাপে পড়ে হাল ছেড়ে দেবেন না। বরং নিমগ্ন হোন নিজের গভীরে। মেডিটেশনের মধ্য দিয়ে ডুবে যান সুখকর কোনো ভাবনায়। কিছুক্ষণ পর সত্যিই অনুভব করবেন, পরিস্থিতি আপনার অনুকূলে এবং সমাধানের উপায় রয়েছে আপনারই হাতে।
মস্তিষ্কের গঠন ও কর্মকাঠামোতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করে মেডিটেশন। যখন আমরা জাগলিং বা এ ধরনের কোনো কৌশল আয়ত্ত করি কিংবা যেকোনো বাদ্যযন্ত্র চালনায় দক্ষতা অর্জন করি, তখন নিউরোপ্লাস্টিসিটি অর্থাৎ মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর মধ্যে আন্তপারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ে বহু গুণ। এসব কৌশল নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের যে অংশটি, সে অংশের পুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।
একাধিক গবেষণায় নিশ্চিত হওয়ার পর নিউরোসায়েন্টিস্টরা এখন বলছেন, নিয়মিত মেডিটেশন-চর্চার ফলে একই ঘটনা ঘটে। তা-ই শুধু নয়, এর পাশাপাশি মেডিটেশন চর্চাকারী শরীর-মনে উপভোগ করেন ভালো থাকার এক অভূতপূর্ব অনুরণন, এটি মনকে প্রশান্ত করে। সব ধরনের স্ট্রেস থেকে মুক্ত করে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে ছড়িয়ে দেয় সুস্বাস্থ্যের এক দারুণ অনুভূতি, যা তার নিরাময় ও সার্বিক সুস্থতাকে নিশ্চিত করে।
বিজ্ঞানের সঙ্গে থাকুন, প্রাকৃতিক নিয়মেই আপনি ভালো থাকবেন
কয়েক দশক ধরে সচেতন ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের চিন্তাজগতে বেশ আগ্রহ আর কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে মেডিটেশন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা ও সাময়িকী এবং সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে মেডিটেশন-সম্পর্কিত শত শত গবেষণা প্রতিবেদন, যেখানে টেনশনমুক্ত প্রশান্ত জীবনযাপন, মনোদৈহিক সুস্বাস্থ্য ও রোগ নিরাময়, জব স্ট্রেসমুক্তি ও পেশাগত সাফল্য এবং সুখী পারিবারিক জীবনের জন্য মেডিটেশনের ইতিবাচক ভূমিকা ও উপযোগিতার কথা তুলে ধরেছেন বর্তমান বিশ্বের আধুনিক ধারার চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয় সোসাইটি ফর নিউরোসায়েন্সের বার্ষিক সম্মেলন। স্বাভাবিকভাবেই তাতে হাজির হন বিশ্বের প্রথম সারির এবং জাঁদরেল সব নিউরোসায়েন্টিস্টরা। মস্তিষ্কের ওপর মেডিটেশনের প্রভাব নিয়ে আলোচনার জন্য সে বছর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় তিব্বতীয় বৌদ্ধশাস্ত্রের আধ্যাত্মিক নেতা ও সাধক দালাই লামাকে। কিন্তু সোসাইটির অন্তত কয়েক শ সদস্য এতে আপত্তি তোলেন। তাঁদের বক্তব্যটিও নিতান্তই উড়িয়ে দেওয়ার নয়, ‘এ ধরনের একটি বিজ্ঞান সম্মেলনে একজন আধ্যাত্মিক সাধকের কথার গুরুত্ব আসলে কতখানি এবং এর প্রয়োজনটাই-বা কোথায়।’ একপর্যায়ে তাঁরা এ আমন্ত্রণ বাতিলের দাবি পর্যন্ত তোলেন।
যাহোক, দালাই লামা পরবর্তী সময়ে সে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রাচীন ভারতীয় দর্শন ও এর চিরায়ত মূল্যবোধ, বিশেষ করে এ অঞ্চলের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধ্যান বা মেডিটেশনকে আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা ও উপস্থাপন করেন তিনি। আলোচনা শেষে বিরোধী মতের বিজ্ঞানীদের ধারণায় আসে ব্যাপক পরিবর্তন। পুরো বিষয়টি ভীষণভাবে আলোড়িত করে সম্মেলনে অংশ নেওয়া নিউরোসায়েন্টিস্টদের। তাঁরা উদ্বুদ্ধ হন বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায়। নিউরোসায়েন্সের আলোকে মেডিটেশনের প্রভাব নিয়ে নতুন ধারার গবেষণার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে ‘দ্য নিউরোসায়েন্স অব মেডিটেশন’ শীর্ষক একটি প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করেছে মার্কিন বিজ্ঞান-সাময়িকী সায়েন্টিফিক আমেরিকান (নভেম্বর ২০১৪)। সেখানে প্রকাশিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা নিবন্ধ ‘মাইন্ড অব দ্য মেডিটেটর’। নিবন্ধটি যৌথভাবে লিখেছেন তিনজন স্বনামখ্যাত বিজ্ঞানী ও গবেষক। তাঁদের একজন হলেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল রিসার্চ এবং যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যান্টনি লাটজ, যিনি নিউরোবায়োলজি অব মেডিটেশন-বিষয়ক দীর্ঘ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। অন্য দুজন হলেন উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েজমেন ল্যাবরেটরি ফর ব্রেন ইমেজিং অ্যান্ড বিহেভিয়ার ও সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিং হেলথি মাইন্ডসের পরিচালক রিচার্ড জে ডেভিডসন এবং ভূতপূর্ব ফরাসি সেলুলার বায়োলজিস্ট ও বর্তমানে একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ম্যাথু রিকার্ড। একাধিক গবেষণার আলোকে তাঁরা জানিয়েছেন, মেডিটেশনকালে একজন মানুষের মন ও মস্তিষ্ক ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়। নিয়মিত মেডিটেশন মানুষের মন ও মস্তিষ্ককে করে তোলে সতেজ ও সুতীক্ষ্ণ। মনোযোগকে করে গভীর ও সূচ্যগ্র। সেই সঙ্গে মনোদৈহিক সুস্থতাসহ মমতা ও সমমর্মিতাপূর্ণ সুখী জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হতে পারে মেডিটেশন।
কেবল বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী কিংবা বিষয়ভিত্তিক সায়েন্স জার্নালেই নয়, আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে মেডিটেশনের উপযোগিতা নিয়ে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী সাময়িকীতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে শুরু করেছে তারও আগ থেকেই। ২০০৩ সালে (৪ আগস্ট) টাইম ম্যাগাজিন প্রচ্ছদ-নিবন্ধ প্রকাশ করে: ‘দ্য সায়েন্স অব মেডিটেশন’। তাতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটি মানুষ এখন নিয়মিতভাবে মেডিটেশনচর্চা করছেন।’ সেই সময়ের তুলনায় এ সংখ্যা এখন কয়েকগুণ। আমেরিকায় মেডিটেশন ক্লাসগুলোতে বিপুল সংখ্যায় মূলধারার জনগোষ্ঠীর উপস্থিতিই প্রমাণ করে, মেডিটেশন এখন তাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা দিন দিন এমনভাবে বাড়ছে যে মেডিটেশনে অবিশ্বাসীরাই এখন সেখানে পরিণত হয়েছে সংখ্যালঘুতে।
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ টাইম ম্যাগাজিন আরেকটি প্রচ্ছদ-নিবন্ধ প্রকাশ করে দৈনন্দিন জীবনযাপনে মেডিটেশনের ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে: ‘দ্য মাইন্সফুল রেভ্যুলেশন’। এ প্রতিবেদনের মূল কথাটিই ছিল, ‘যখন যে কাজই করুন, পর্যাপ্ত মনোযোগ দিন। আর এর অন্যতম প্রধান উপায় হলো মেডিটেশন; যা আপনাকে শারীরিক, মানসিক, পেশাগত, পারিবারিক, সামাজিক—সব দিক থেকেই আপনাকে ভালো রাখবে।’
বিশ্বজুড়ে এমন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যগবেষক ও বিশেষজ্ঞরা তাই এখন পরামর্শ দিচ্ছেন—নিয়মিত মেডিটেশন করুন। তাতে সব দিক থেকেই আপনি ভালো থাকবেন। প্রশান্ত গতিময়তায় এগিয়ে যাবেন সুখী-সফল জীবনের দিকে। সত্যিকার অর্থেই লাভ করবেন সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন।
লেখাটি ২০১৫ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের ‘তারুণ্য’ ম্যাগাজিনের পঞ্চম সংখ্যা থেকে নেওয়া।
মেডিকেল কাউন্সেলর, কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাব