কুহেলিকা নগর

অলংকরণ: আরাফাত করিম

পাথরের শহরেও শীত নামে
শৈত্যপ্রবাহে ধেয়ে আসে উত্তরী হিম
ধোঁয়া ধুলোয় ব্যস্ত পিচঢালা জনপদ
ভিজে যায় ভোরের শিশির
কুয়াশায় মলিন হয় হেমন্তের শেষবেলায়
আকাশের গোধূলি আবির
তবু এ শহরের হৃৎপিণ্ড বারোমাসি খরায় পোড়ে।
এ শহরে অর্থের বিনিময়ে মাদকীয় সুঘ্রাণ মেলে
দোকানে বিক্রি হয় খোঁপার ফুল!
অতৃপ্ত মনের হাহাকারে বিষণ্ন হয় আকাশ
পারফিউমের সুগন্ধি ভেদ করে বাতাসে মিশে
হৃদয় পোড়া দগ্ধ ক্ষতের উৎকট গন্ধ!
কাজলটানা চাকচিক্যের আড়ালের দৃষ্টিগুলোও
বড় বেশি রকমের অন্ধ।

শহরের নীড়গুলো যেন পরিপাটি খাঁচা
নিয়মের সংস্কৃতিতে চলে বিলাসী জীবন
লতানো লতায় থোকায় থোকায় মাধবীলতা ফোটে
মারবেল–খচিত শৌখিন বারান্দায়
লোহার গ্রিল বেয়ে ঝুলে থাকে গাঢ় সবুজ।
ঈর্ষা ও দম্ভে সজীবতা হারায় মানব মুখাবয়ব!
নিষ্ঠুরতায় বড্ড রুক্ষ তাদের হৃদয়।
শহরের পথগুলো আলো–আঁধারিতে ধূসর
সম্মুখে হাঁটতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায় শত সহস্র আগন্তুক!
মোহজালে দ্বিধান্বিত হয়ে অজস্রবার পথ হারায়
কেউ কেউ গন্তব্যে পৌঁছালেও
ঝিলমিল স্বপ্নগুলো শহুরে কুহেলিকায় দিক্‌ভ্রান্ত হয়ে
বেশির ভাগ পথিক কেবল ভুল পথেই পা বাড়ায়।