সাম্যের কবি

কাজী নজরুল ইসলাম (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬—১২ ভাদ্র ১৩৮৩)প্রতিকৃতি: সব্যসাচী মিস্ত্রী

চিনিবে কি তাঁরে, তিনি সাম্যের কবি।
মহান ব্যক্তিত্ব, সুমহান সম্মান
আদর্শ মানুষের মতো গর্জন,
অন্যায়, নিপীড়ন, মিথ্যা করেছিল যে বর্জন
শ্রেষ্ঠ নজরুল, এ বাংলার অর্জন।
সময়কাল ১৮৯৯, চুরুলিয়ায় জন্ম তাঁর
নজরুল মহামানব,
অন্যায়, অত্যাচার, মিথ্যার বিরুদ্ধে দানব।
বনেবাদাড়ে পরি, গলায় পালাগান!
লেটোর রাজা, অবিরাম সম্মান।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সৈনিক,
পদোন্নতির ফলে হাবিলদার,
শ্রেষ্ঠ উক্তি, ‘সংগ্রাম শুরু হয়ে গেছে মা,
এবার যেতেই হবে আমার।’

চিরদুর্দম, দুর্বিনীত সত্য
উত্তাল রণক্ষেত্র।
যারা ছিল শাসক, শোষক
অগ্নিবীণা শুনে তারা হয়েছিল হতবাক।
মানুষের সম্মান সবার ওপরে রাখিয়াছেন প্রভু
নজরুল অমান্য করেনি তা কভু।
তিনিও বলিয়াছেন, সবার ওপর মানুষ সত্য,
গাহি সাম্যের গান,
ডাকিয়াছে সবারে, জানিয়েছে এক হওয়ার আহ্বান।
বিদ্রোহ ডাকিয়াছে সে
অমানবিকতার বিরুদ্ধে।
শিহরিত ‘বিদ্রোহী’ কবিতার প্রতিটি চরণ
লোম দাঁড়িয়ে গেছে তার, যে করেছে শ্রবণ।
সময় কাটিয়াছে কী নিদারুণ,
তেতাল্লিশে হলো বাকরুদ্ধ, কল চলেছে অবিচল।

ছাত্র–জনতার লক্ষ্যে ছাড়িয়াছে হাঁক,
গাহিছে নবীনের গান,
এক হও! এক হও!
মানুষের সাথে মানুষের বিভেদ মেটাও
সম্প্রীতির বাজনা বাজাও।
সাহিত্যে যার অবদান বিরল
বাহাত্তরে বাংলায় আগমন,
জাতীয় কবির খেতাবে ভূষিত তিনি
জানি, জানি, ইহার যোগ্য ছিলেন তিনি।
কাঁদিয়াছে অভাগীর জন্য,
যাহা বলিয়াছি আমি, তাহা যে খুবই নগণ্য।
মৃত্যুক্ষুধায় ডাকিয়াছে তারে
চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে রিক্তের বেদন।
প্রত্যাশা এ বাংলায়, কবে থামবে
অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন।
১৯৭৬ আর রইল না ভালো তাহার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে অবসান।