মায়ের ইচ্ছেপূরণ

মায়ের সঙ্গে লেখকছবি: লেখকের সৌজন্যে

ছোটবেলা থেকেই মায়ের সঙ্গে আমার খুনসুটি অন্য রকম। মা যখন ভালো মেজাজে থাকেন, নরম সুরে কথা বলেন, তখন বেশ ভালো লাগে। আবার কোনো বিষয়ে রেগে গেলে খুব খারাপ লাগে। অবশ্য এই রাগ ক্ষণিকের। তিনি যখন কাঁদেন, তখন আমার বেশ মন খারাপ হয়। তিনি স্বপ্ন দেখেন আমি যাতে সরকারি কর্মকর্তা হই। তিনি আমার প্রতিভাকে বেশ গুরুত্ব দেন। বিশেষ করে লেখালেখিকে। তবে এটিকে মা কেবল শখ হিসেবে মানতে রাজি, পেশা হিসেবে নয়। একদিন আমার এই শখ তাঁর ছোট্ট একটি ইচ্ছেপূরণ করতে সক্ষম হয়েছিল।

একদিন সন্ধ্যায় মা মাগরিবের নামাজ শেষে খাবার টেবিলে বসে আছেন। হঠাৎ আমার ছোট বোনকে দেখে বললেন, ‘আমার খুব ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে। একদম টক, ঝাল মিশিয়ে।’ আমি পাশের ঘর থেকে কথাটা শুনলাম। তবে খুব আফসোস হলো। মানিব্যাগে সেদিন মাত্র বিশ টাকার একটা ছেঁড়া নোট ছিল। ভাবতে লাগলাম, কী করা যায়। হঠাৎ একটা কথা মনে পড়ে গেল। এক সপ্তাহ আগে একজনের একটা কনটেন্ট লিখে দিয়েছিলাম। দুদিন পর সম্মানী পাঠানোর কথা। ব্যস, মনে মনে সেটি হাতে পাওয়ার প্রহর গুনছিলাম। তিনি অবশ্য পরদিনই আমাকে সম্মানী পাঠিয়ে দিলেন। আমি তো খুশিতে আত্মহারা। এটিই ছিল লেখালেখি থেকে আমার প্রথম আয়।

সেদিনই প্রথম মাকে নিজের টাকা দিয়ে ফুচকা কিনে খাইয়েছিলাম। মা অনেক খুশি হন। সেই অপূর্ব দৃশ্য আমার জীবনের অন্যতম সেরা স্মৃতি।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, চট্টগ্রাম বন্ধুসভা