আমাদের প্রিয় মিন্টু

মিন্টুর সঙ্গে লেখকছবি: সংগৃহীত

২০১৯ সালের এক শীতের রাতে বাড়ির পেছন থেকে একধরনের আওয়াজ আসছিল। আম্মুকে বললাম। তিনি একটু ভয় পেয়ে যান। গ্রাম বলে কথা। চারদিকে ধানখেত, পাশে পুকুর আর আমাদের বাড়ি। আম্মু বলছিলেন, সাপ বা ব্যাঙ হতে পারে। কিছুক্ষণ পর আওয়াজ আরও বেড়ে গেল। আম্মু আর আমি টর্চলাইট নিয়ে বের হই।

দেখলাম ফুটফুটে তিনটি কুকুরের বাচ্চা। যখন চট্টগ্রাম শহরে থাকতাম তখন থেকে খুব ইচ্ছে ছিল গ্রামের বাড়িতে এলে কুকুর পালন করব। আম্মুও পশুপাখি খুব ভালোবাসেন। এবার যেহেতু কুকুর নিজের বাড়ির পেছনে পেলাম, হাতছাড়া করতে ইচ্ছে করল না।

তিনটি বাচ্চার মধ্যে একটি পুরুষ ও দুটি নারী। আম্মুকে বলে পুরুষ বাচ্চাটি বাড়িতে নিয়ে আসি। নাম দিলাম মিন্টু। বাকি দুটিকে তাদের মায়ের কাছে রেখে আসি। আব্বুরও খুব ভালো লাগল মিন্টুকে। এদিকে আপুরা চট্টগ্রাম থেকে এসে খুব খুশি হলো এ রকম সুন্দর একটি বাচ্চা দেখে। আম্মু আর আমি কুকুরছানাটির জন্য ছোট কাগজ দিয়ে ভালোভাবে বসার ও ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিই। এভাবে কিছুদিন যায়। তার পর থেকে নাম ধরে ডাক দিলেই চলে আসে। মিন্টুর জন্য আব্বু প্রতিদিন কেক, পাউরুটি, পরোটা আরও কত কিছু নিয়ে আসে। ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল।

একদিন হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে মিন্টুর জন্য আব্বু ওষুধ নিয়ে আসে এবং চিকিৎসা দেয়। ডাক্তার হওয়ায় আব্বু নিজেই ইনজেকশন পুশ করে দিয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে মিন্টু। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। এর মধ্যে একদিন বন্যা এল। চারদিকে প্রচুর পানি। মিন্টুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সবাই অনেক খোঁজাখুঁজি করল। কয়েক দিন পর মিন্টু বাড়িতে ফিরে আসে। আম্মু-আব্বুর খুশির যেন সীমা নেই।

খুবই শান্ত প্রকৃতির আমাদের মিন্টু। মাঝেমধ্যে দরজা খোলা পেলে কোনো কথা ছাড়াই রুমে এসে ঘুমায়। সে আমাদের পরিবারের একজন। সুযোগ পেলে মিন্টুকে নিয়ে ঘুরতে বের হই।

বন্ধু, চকরিয়া বন্ধুসভা, কক্সবাজার