কালিজিরার যত উপকার

কালিজিরা

কালিজিরাকে সর্ব রোগের মহৌষধ বলা হয়। হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘কালিজিরা মৃত্যু ব্যতীত সব রোগেরই ওষুধ।’

পুষ্টি উপাদান

কালিজিরার প্রধান উপাদানের মধ্যে রয়েছে আমিষ ২১ শতাংশ, শর্করা ৩৮ শতাংশ, স্নেহ ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী ক্যারোটিন, শক্তিশালী হরমোনসহ খনিজ পদার্থ, ভিটামিন-এ, ভিটামিন- বি১, ভিটামিন-বি২, ভিটামিন-সি, নিয়াসিন, আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, কপার, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ফোলাসিন, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, নাইজেলোন, থাইমোকিনোন, স্যাপোনিন, ক্রড ফাইবার, লিনোলেনিক অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসহ আরও অনেক উপাদান।

উপকারিতা:

 কালিজিরাতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকায় প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে এবং রাসায়নিক বিষাক্ততা কমায়। এতে লিভার ও কিডনি সুস্থ থাকে।
কালিজিরার তেল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মিত কালিজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রতঙ্গ সতেজ থাকে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
দেহের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে ও মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
শিশুদের দৈহিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং মস্তিষ্কের সুস্থতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দূর করে।
কালিজিরার তেল গরম করে হাঁটু বা অন্যান্য জয়েন্টগুলোতে ম্যাসাজ করলে ব্যথা দূর হয়।
মধু বা লাল চায়ের সঙ্গে কালিজিরা খেলে সর্দি–কাশিতে আরাম পাওয়া যায়।
যেসব প্রসূতি মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই, তাঁরা রাতে ঘুমানোর আগে কালিজিরা মিহি করে দুধের সঙ্গে খেলে ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে দুধের প্রবাহ বাড়ে। এ ছাড়া এক চা–চামচ কালিজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দিনে তিনবার করে খেলে শতভাগ উপকার পাওয়া যায়।
গরম পানিতে কালিজিরা নিয়ে তা দিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথা উপশম হয়।
পানিতে কালিজিরা বেটে প্রলেপ দিলে হাত–পা ফোলাসহ সব ধরনের শোথ কমে যায়।
কালিজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানি, ধবল রোগ, দাদ রোগ দূর হয়।
নিয়মিত কালিজিরা সেবনে চুলের গোড়ার পুষ্টি ঠিক মতো পায়, চুলের বৃদ্ধি ও চুল পড়া বন্ধ হয়।
কালিজিরা বেটে খেলে জন্ডিস, প্লীহাবৃদ্ধি, শূল ব্যথা, বুকের ব্যথা, বমনেচ্ছা দূর হয়।
গর্ভবতী মা কালিজিরা সেদ্ধ করে খেলে সন্তানের প্রসব তাড়াতাড়ি হয়।
ভিনেগারে ভিজিয়ে কালিজিরা খেলে কৃমি নষ্ট হয়।

পরিমাণমতো ও নিয়মিত কালিজিরা খেলে আরও যেসব উপকার পাওয়া যায়, তা হলো—অরুচি, উদরাময়, পেট ফাঁপা দূর হয়, প্রস্রাব পরিষ্কার হয়, মাইগ্রেন দূর করে, ক্যানসার প্রতিরোধ করে, ঘুমের সমস্যা দূর করে, বিভিন্ন চর্মরোগ দূর করে, হার্টের উপকার করে, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে, অর্শরোগ নিরাময়ে সাহায্য করে, গ্যাস্ট্রিক বা আমাশয় নিরাময়ে সাহায্য করে, ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

শিক্ষার্থী, খাদ্য প্রযুক্তি ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়