প্রথম দেখা, প্রথম রোদ

ছবি: এআই/বন্ধুসভা

গত ১৫টা বছর বিনি নিজের ইচ্ছায় সাজগোজ করেনি। না ছিল উৎসাহ, না ছিল উপলক্ষ। হয়তো চুল আঁচড়িয়ে, কোনো দিন কেবল মায়ের কথায় কপালে টিপ এঁকেছে, তা–ও দায়সারাভাবে। কখনো নিজের মন থেকে, আনন্দ নিয়ে কিছু করা হয়নি।

তবে সেদিনের সকালটা ছিল অন্য রকম। অদ্ভুত এক অনুভব নিয়ে ভোরেই ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙতেই মনে পড়ল, আজ নোমি আসবে। জানালার বাইরে আলো ফোটেনি তখনো। অথচ বিনির ভেতরটায় যেন রোদের ঢেউ উঠেছে। চুপচাপ আয়নার সামনে দাঁড়ায়। ভেতরের এক নতুন মানুষ যেন কথা বলে উঠল।

১৫ বছর পর প্রথমবার নিজের ইচ্ছায় সাজল বিনি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিচ্ছবিকে দেখে জিজ্ঞেস করল—
‘তুমি রেডি তো?’
প্রতিচ্ছবির ঠোঁটও মুচকি হাসি দিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ, আজ আমি রেডি।’

চুপচাপ চুল আঁচড়াল বিনি। হালকা একটা কাজল টেনে নিল চোখে। ঠোঁটে রাখল একটুখানি রং, যেন অনেক দিন পর জীবনেও রং ফিরেছে। নিজেকে ভালো লাগছিল তার।
মিনিট পেরোতেই ফোন বাজল, নোমির কণ্ঠ—
‘তুমি রেডি?’
‘হ্যাঁ, আমি রেডি।’

অদ্ভুত এক উত্তেজনায় মন ভরে উঠছিল। তার সঙ্গে দেখা, প্রথমবার। তার কাছে যাওয়া এক পা এক পা করে। যখন সামনাসামনি দেখা হলো, চোখ একেবারে আটকে গেল তার মুখে। তার হাসিতে, চোখে, চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা ভঙ্গিতে বিনি ডুবে গেল। সারাক্ষণ শুধু তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। বিনির মন বলছিল, এটাই তো সেই বহু কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত, যা বহু বছর ধরে খুঁজে ফিরেছি।

সেদিন প্রথমবার নোমির চোখে চোখ রাখা। প্রথমবার একসঙ্গে হাঁটা। প্রথমবার বুকের ভেতর ধুকপুক শব্দে প্রেমকে আলতো করে ছুঁয়ে দেখা। আলো ফুরিয়ে এসেছিল বিকেলের, কিন্তু তার ভেতরের রোদ তখনো ঝলমল করছিল।

কলেজ রোড, চকবাজার, চট্টগ্রাম