চলুন কিছু সময়ের জন্য কল্পনার জগৎ থেকে ঘুরে আসি। হঠাৎ করে সরকার ঘোষণা দিল, আজ থেকে ডিম খাওয়া অপরাধ। আইন অমান্য করে কেউ খেলে তার জেল-জরিমানা হবে। এরপর কী হবে? খাবার বিক্রি করে, এমন সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। রেস্টুরেন্টগুলোকে খাবার মেনু নতুন করে সাজাতে হবে। কারণ, অধিকাংশ মেনুতে ডিম ব্যবহার করা হয়। ডিম উৎপাদন করে যে কারখানাগুলো, তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এর বাইরে বড় ধরনের ঝামেলায় পড়বে শহরের বিভিন্ন মেস ও হোস্টেলে থাকা ব্যাচেলররা। তাঁদের তিন বেলা খাবারের দুই বেলাতেই থাকে ডিম!
এবার কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবতায় ফিরে আসি। ডিম খায় না, এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কম আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে এটি অন্যতম। কিন্তু আপনি কি বলতে পারবেন ডিম খাওয়ার প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়েছে?
সঠিক তথ্যের কথা কেউ বলতে না পারলেও ধারণা করা হয়, ছয় মিলিয়ন বছর আগে থেকে ডিম খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। তখন মানুষেরা সরাসরি পাখির বাসা থেকে ডিম নিয়ে কাঁচা খেত। তবে কে প্রথম ডিম খেয়েছিল, সেই তথ্য জানার কোনো উপায় নেই। বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, চীন ও মিসরের মানুষেরা প্রথম মুরগির ডিম খাওয়া শুরু করে। এটাও ধারণা করা হয় যে ১৪৯৩ সালে যখন ক্রিস্টোফার কলম্বাস নতুন বিশ্বে ফিরে আসে তখন তাঁর জাহাজে মুরগি ছিল। সেই মুরগি ডিম দিলে তিনি সেটি খেয়ে দেখেন এবং এর পর থেকে ডিম খাওয়ার প্রচলন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
পেজ স্মিথ ও চার্লস ড্যানিয়েলের লেখা ‘দ্য চিকেন বুক’-এ বলা হয়েছে, মানুষের ইতিহাসের প্রথম দিকের কিছু সময়ে মাংস ও ডিমের উৎস ছিল পাখি। পুরুষেরা বুঝতে পারে যে জঙ্গলের নারী পাখিগুলোকে তাদের বাসা থেকে নিয়ে এসে অন্যত্র লালনপালন করলে ডিম আরও বেশি পাওয়া যাবে। চীন ও মিসরের তথ্যানুসারে, ৩২০০ বিসিই-এর দিকে ভারতে গৃহপালিত জঙ্গল পাখি ছিল। আর ১৪০০ বিসিই-এর পূর্বে মানুষের চাহিদা পূরণে ডিম উৎপাদনের জন্য পাখি লালনপালন করা হতো এবং নিওলিথিক যুগে ডিম উৎপাদন হতো বলে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে। অন্যদিকে ডিম পাড়া মুরগির আবিষ্কার করে রোমানরা।