বন্ধুসভার কারণে আজ আমি সবার সামনে বলতে পারি

বন্ধুসভা কথা বলার সাহস জোগায়ছবি: আনাস খান
এখন যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন, ‘বন্ধুসভা করে কী পেলে? কেন করছ বন্ধুসভা?’ উত্তরটি গুছিয়েই বলতে পারব। কারণ, এখন আমি বলতে পারি।

ছোটবেলা থেকেই কথা খুব কম বলতাম। এ কারণে বন্ধুতালিকায় ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। কলেজে ওঠার পর থেকেই এমন একটি জায়গা খুঁজতাম, যেখানে সবাই মিলে সমাজের জন্য উপকার হয়, এমন কাজ করা যায়। ২০১৬ সালে বন্ধুমেলা আয়োজন থেকে ভৈরব বন্ধুসভার সঙ্গে পরিচয়, তারপর পাঠচক্রে এসে নিয়মিত সদস্য হই। তখন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক সুমন ভাই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘বন্ধুসভায় কেন আসছ? কী উদ্দেশ্যে বন্ধুসভা করতে চাও?’ মনের ভেতরে অনেক কথা ছিল। কিন্তু সেদিন বলতে পারিনি কিছুই।

কাজে, আড্ডায়, সাংগঠনিক পরিচর্যায় কেটে যায় দুই বছর। এই দুই বছরে অনেক কিছু শিখি। যেমন সাংগঠনিক কাজ, নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরা, মঞ্চে অভিনয়সহ আরও অনেক কিছু। পাঠচক্রে বই নিয়ে আলোচনা করার ফলে ভেতরের জড়তা কেটে যায়। এখন সবার সামনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে পারি। আর এখন যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন, ‘বন্ধুসভা করে কী পেলে? কেন করছ বন্ধুসভা?’ উত্তরটি গুছিয়েই বলতে পারব। কারণ, এখন আমি বলতে পারি।

দেয়ালিকা, একটি করে রঙিন জামা ও পাঠচক্র আমার বিশেষ ভালো লাগার জায়গা। বন্ধুসভায় এসে এই কাজগুলোর সঙ্গে পরিচয়। কাজগুলোতে অংশ নিয়ে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পাই। ২০১৭ সালের দেয়ালিকা পুরোটা হাতে লিখে সম্পাদনা করে খুব ভালো লেগেছিল। সেই ভালো লাগা দ্বিগুণ হয় যখন সমাবেশে আমরা অর্জন করেছিলাম সেরা দেয়ালিকার পুরস্কার। সহমর্মিতার ঈদ আয়োজনে নতুন জামা দিয়ে বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রতিবারই অনেক ভালো লাগে। আর বই পড়ার অভ্যাস পাঠচক্রের কল্যাণেই হয়েছে।

বন্ধুসভায় এসে পেয়েছি ভালো কাজ করার উৎসাহ। দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনার জগৎ বিকশিত করার শিক্ষা, পেয়েছি নিজস্ব মতামতকে উপস্থাপন করার ক্ষমতা। পেয়েছি কথা বলার সাহস।

বন্ধুসভা একদিকে যেমন রুচিশীল কাজ করার জায়গা, তেমনি আবার মানবিক কাজে উদ্যমী, সাংগঠনিক করে গড়ে তোলার কারিগর।

সভাপতি, ভৈরব বন্ধুসভা