জ্বর আর টনসিলের কারণে শরীরের ওপর বেশ ধকল গিয়েছে। ছুটি থাকায় কলেজেও যাওয়া হচ্ছে না। প্রাণের তৃপ্তি আর সজীবতার জন্য একটু আড্ডা, গল্পের বড্ড প্রয়োজন! বিকেলে বসে আছি। হঠাৎ মোবাইলের নোটিফিকেশন এল। দেখলাম, জাবেরের মেসেজ, ‘অনেক দিন হলো দেখা হয় না, কোথায় তুই?’ আমি বললাম, বাসায়। আমাকে সে সাজিদ রাজার বাড়িতে আসতে বলল।
বেরিয়ে পড়লাম! গিয়ে দেখি, সেখানে অনেক দর্শনার্থী। কেউ গল্প করছেন, কেউ হাটঁছেন আর কেউবা ছবি তুলছেন। হৃদয়দের খুঁজে পেলাম না! কল দিলাম, তাঁরা জানাল গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ঠিক হয়েছে। আসছে! বেশ কিছুটা সময় পর জাবের, আনোয়ার, হৃদয় এল। বুকে জড়িয়ে নিলাম একে অপরকে। সত্যিই তো কত দিন পর আমাদের দেখা! অথচ একসময় নিয়মিত দেখা হতো, গল্প হতো।
যাহোক, দীর্ঘদিন পর আড্ডায় মেতে উঠলাম আমরা। কখনো স্মৃতিচারণ, ফাজলামি আরও বিভিন্ন বিষয়ে সবুজ ঘাসের গালিচায় আমাদের আড্ডা জমে উঠল! আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে হৃদয় তাঁর গিটার বাজিয়ে আমাদের গান শোনায়। তারপর আমরা দেওয়ান সাজিদ রাজার বাড়ি ঘুরলাম। দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের সঙ্গ পেয়ে প্রাণে একটু ভালো লাগার সঞ্চার হলো!
সাজিদ রাজার বাড়ি সম্পর্কে একটু বলে নেয়া যাক। বলা হয়, ১৮ শতকে দেওয়ান সাজিদ রাজা এ বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। এখানকার চমৎকার স্থাপত্যশৈলী দিয়ে তৈরি বড়বাড়ি জামে মসজিদ দৃষ্টি কাড়বে যে কারও! এ ছাড়া সামনে আছে বিশাল দীঘি, রয়েছে একটি তেরোচালা ঘর। জনমুখে কথিত আছে যে সে সময়কার ১৩ হাজার টাকা মজুরিতে ঘরটি নির্মাণ করেছিলেন কলকাতার মিস্ত্রীরা। সবুজের বুকে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাচীন এ স্থাপনাটি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রামে অবস্থিত। ঘোরার ফাঁকে আমরা ছবিও তুললাম। আড্ডা হইহুল্লোড় আর বাজারে খাওয়াদাওয়া শেষে নদীর পাড়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে এক অন্য রকম ভালো লাগা আর প্রশান্তি নিয়ে নীড়ে ফিরে আসি।
শিক্ষার্থী, মালিক নাহার মেমোরিয়াল একাডেমি, কানাইঘাট, সিলেট