এক নিঃশ্বাসে বলল, ‘লেখক অপ্রত্যাশিত কোনো এক অতিথি। আমার ব্যাক্তিগত লেখক। যদিও তার প্রকাশিত কোনো বই নেই। তবে আমি তার ক্ষুদ্র পাঠিকা।’
শ্রাবণের শেষ বিকেল, রুমে বসে অলস সময় পার করছি। হঠাৎ ফোনে ছোট্ট একটা ম্যাসেজー
‘আমি নদীর পাড়ে বসে আছি।’ বুঝতে দেরি হলো না; ও আমার জন্য অপেক্ষা করছে। ও আমার ভালো বন্ধু অর্পিতা। আমাদের কথা কম, ঝগড়া বেশি হয়। প্রায়ই নদীর পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দেখি। তৈরি হয়ে চলে গেলাম।
আজ লাল শাড়ি পরে বসে আছে। পেছন থেকে গিয়ে চোখ চেপে ধরলাম। একটুও চমকালো না। বলল, ‘জানি তুই।’
‘বুঝলি কীভাবে?’
মৃদু হেসে বলল, ‘জানতাম তুই আসবি।’
চোখ ছেড়ে পাশে বসলাম।
লাল শাড়ি, হাতে লাল একটা ডায়েরি। আমাকে দেখে ডায়েরিটা লুকাল। বললাম, নদীর পাড়ে বসে একা একা কী করিস? বলল, ‘কবিতা পড়ছি।’
‘তুই আবার কবিতার প্রেমে পড়লি কবে থেকে?’
একটু রেগে বলল, ‘কেন, কবিতার প্রেমে না পড়লে কি কবিতা পড়া বারণ?’
‘বারণ ঠিক না। তবে তুই কবিতা পড়ছিস, এটা দেখে খুব অবাক হলাম। যাহোক, তোর কবিতার লেখক কে?’
গম্ভীর মুখে বলল, ‘লেখক যেই হোক, তোকে বলব কেন!’
বুঝলাম আমার কথায় রাগ করেছে। তবে এ রাগ বেশিক্ষণ থাকবে না। কোথায় যেন পড়েছিলাম, একটু প্রশংসা পেলেই নাকি মেয়েদের রাগ ভেঙে যায়।
বললাম, তোকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে, যেন লাল পরি। টিপ পরলে আরও বেশি সুন্দরী লাগত।
খুশিতে গদগদ হয়ে বলল, ‘সত্যি সুন্দরী লাগছে!’
হাসতে হাসতে বললাম, ‘নাহ। আমি মিথ্যে বলছি, তোকে মোটেও সুন্দরী লাগছে না।’
এখন বল কবিতার লেখক কে? যদিও জানি ওগুলো আমার লেখা কবিতা। পেছনে দাঁড়িয়ে সব দেখেছি। তবু শুনলামー
কোনো দম না নিয়ে এক নিঃশ্বাসে বলল, ‘লেখক অপ্রত্যাশিত কোনো এক অতিথি। আমার ব্যাক্তিগত লেখক। যদিও তার প্রকাশিত কোনো বই নেই। তবে আমি তার ক্ষুদ্র পাঠিকা।’
শিক্ষার্থী, সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ, খুলনা