স্যারের কাছ থেকেই জ্ঞানের বিশাল জগতের সঙ্গে পরিচয়
‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ উপন্যাসের মতো পদ্মার চরে আমার বাড়ি। যেখানে পড়াশোনা খুব একটা হয় না। কোনোমতে পাস করে একটা সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারলেই সবাই খুশি। এমন একটা পরিবেশে বেড়ে উঠায় জ্ঞান অর্জনের যে বিশাল একটা জগৎ আছে, আমার জানা ছিল না। এসএসসি পাসের পর গ্রাম থেকে দূরে মফস্সলের একটা কলেজে ভর্তি হই।
সেখানে পরিচয় মোহাম্মদ আলী স্যারের সঙ্গে। তিনি বাংলা পড়াতেন। স্যার আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে, বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে পরিচয় করালেন। নতুনভাবে ভাবতে শেখালেন, নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করতে শেখালেন। শিক্ষার যে মূল উদ্দেশ্য মনুষ্যত্ব অর্জন করা, আমি এটা ওনার কাছ থেকেই প্রথম শিখি। মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য বিবেকবান হতে হবে, আর বিবেকবান হওয়ার জন্য প্রচুর বই পড়তে হবে।
বই পড়ার বিষয়ে স্যার একটা কথা সব সময় বলতেন, ‘যখন তুমি বই পড়বে, তখন সেই বইয়ের কোনো চরিত্র হিসেবে নিজেকে কল্পনা করে নিবে অথবা অশরীরী ছায়া হয়ে সবগুলো চরিত্রকে গল্পের মধ্যে ঢুকে অনুসরণ করবে। তাহলে সেই গল্পের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতা তোমার মনকে নাড়া দিবে। বাস্তব অভিজ্ঞতার মতো এই কাল্পনিক অভিজ্ঞতাও তোমার জীবন জাগানিয়া হিসেবে কাজ করবে।’
জীবনে এমন একজন শিক্ষাগুরু পেয়েছিলাম বলে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি যেখানেই থাকুন, সব সময় সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকুক, এই কামনা রইল।
সাংগঠনিক সম্পাদক, বশেমুরবিপ্রবি বন্ধুসভা