শরতের চিঠি
গত রাতের অর্ধাকৃতি চাঁদের সরস নেমন্তন্ন। প্রভাতে গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন কাঠগোলাপ ওই ঘন কেশের সৌন্দর্যবর্ধন। তাই বনলতা সযত্নে শিশিরের ওপর তার অস্তিত্ব রেখে দিয়েছে। বিকেলের আকাশে গুটিকয় দানবাকৃতি শুভ্র মেঘের ভেলা। সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া মুক্তিকামী পক্ষীর দল খুব সতর্কে গা ভাসিয়েছে। বাদলে প্রাণ ফিরে পাওয়া নদীটি আজ সখ্যতার সঙ্গে তরঙ্গে তান ধরেছে। গোধূলিলগ্নে উত্তরে মুখ রেখে দুহাত প্রশস্ত করা বালিকার সুখ অনুভব। না দেখলে বুঝতামই না হাওয়ায় ভাসা কাকে বলে? প্রকৃতি ব্যস্ত নিজেকে সাজাতে। তার পানে অধীর আগ্রহে চেয়ে আছে দূরের আকাশের ক্ষেপে যাওয়া নক্ষত্র। দল বেঁধে পাখিগুলো নীড়ে ফিরছে। তাই ঘরে ফিরতে হলো।
শহরের বড় বড় অট্টালিকাগুলোর ছাদে থেমে গিয়েছে স্বপ্নবাজের ঠিকানা। জানালায় উঁকি না দিলে চাঁদের নয়নাভিরাম হয় না। আলো নেই, শোভা নেই আজ আর চাঁদ ওঠেনি। মস্ত বড় অসুর গ্রাস করেছে তার তেজকে। দেবতারা মানতে পারছে না পরাজয়। তাই একের পর এক শক্তির প্রদর্শন মনুষ্য চোখেও চিড়ে দেওয়ার মতো আঘাত হানছে। সেদিন পবনদেবের সঙ্গে বরুণদেবের যৌথ প্রয়াসে শীতলতা বরণ করেছে। আয়েশে ঘুমিয়ে পড়েছে চেতনাগুলো।
প্রভাতের স্বাধীন মেঘশূন্য আকাশে দিবাকরের উপস্থিতি। নাশতা করে বেরিয়ে পড়লে ভিজে মাটিতে মহীলতার কারুকার্য চোখে দেওয়ার মতো। এই খটখটে দুপুরেও বেলের আওয়াজ। দরজা খুললেই হলদে কুর্তিপরা ডাকপিয়ন। চিঠির এক পাশে ছোট করে লেখা শুভ্রতার শুভেচ্ছা। সত্যি হলো সরস নেমন্তন্ন।
শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়