একটি কল্পিত গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। ধরুন, ‘একটি গাধা স্কুলের সামনে দিয়ে যাচ্ছে। শুনতে পেল, এক অভিভাবক বলছে, মাস্টারমশাই, আমার ছেলে তো বোকাসোকা, দেখেন ওকে মানুষ করতে পারেন কি না।’
মাস্টার বললেন, রেখে দিয়ে যান। কোনো চিন্তা নেই। কত গাধাকে পিটিয়ে মানুষ করলাম। আর আপনারটা তো কেবলই বোকাসোকা। পারব।
গাধা স্কুলের আশপাশে ঘুরতে লাগল। মাস্টারের চোখে যদি সে পড়ে। তাকে যদি মাস্টারমশাই পিটিয়ে মানুষ করে দেন।
এটা নিছক গল্প হলেও কোনো বোকামি বা ভুল কাজ করলে আমাদের সবাইকে কমবেশি যে প্রাণীর সঙ্গে তুলনা করা হয়, সেটি হলো গাধা। কেউ অদ্ভুত কাজ করলে তাকেও আমরা গাধার সঙ্গে তুলনা করি। প্রাণী হিসেবে সবচেয়ে কর্মঠ হলেও কবে, কোন বোকামির উদাহরণ টানতে গাধা শব্দটির প্রচলন হলো তা বলব আজ।
প্রতিবছর ৮ মে পালন করা হয় গাধা দিবস। এই দিবসের প্রচলন করেছিলেন বিজ্ঞানী ও গবেষক আর্ক রাজিক। মূলত তাঁর কাজ ছিল মরুভূমির প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, গাধারা মানুষের জন্য যে পরিমাণ কাজ করে, সেই পরিমাণ স্বীকৃতি পাচ্ছে না। এ জন্য তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেন। সেখানে গাধাবিষয়ক বিভিন্ন উপকারী তথ্য প্রচার করতে শুরু করেন। আর্ক রাজিকের প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে প্রথম বিশ্ব গাধা দিবস পালন করা হয়। তখন থেকে প্রতিবছর ৮ মে গাধা দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটির উদ্দেশ্য হলো গাধা যে কয়েক শতাব্দী ধরে মানুষের জন্য কাজ করছে, সে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া এবং তারা কীভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে তা তুলে ধরা।
মানুষ তাঁর নিজ প্রয়োজনে সারা বিশ্বে গাধাকে ব্যবহার করছে। মানুষ জানে গাধা দীর্ঘপথ ভ্রমণ করতে পারে এবং প্রতিকূল জলবায়ুতেও টিকে থাকতে পারে। গাধা শক্তিশালী এবং কঠোর পরিস্থিতিতেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। তাদের চলার গতি ঘণ্টায় ৩১ মাইল পর্যন্ত হতে পারে। গাধার গড় আয়ু ৫০ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে হয়। সারা বিশ্বে এই প্রাণীকে বোঝা টানতে ব্যবহার করা হয়। গাধারা তাদের ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের জন্য আমাদের সবার কাছে বেশ পরিচিত। তারপরও কটাক্ষ করে আমরা এই ‘গাধা’ শব্দ ব্যবহার করি। এটা মোটেও উচিত নয়।