আম্মা

মায়ের সঙ্গে কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক
ছবি: সংগৃহীত

একদিন এ শহর ছেড়ে আমি চলে যাব
কই যাব আর রংপুর ছাড়া
রংপুরে আমার আম্মা থাকেন
যদি আমি চাকরি না করি, যদি আমার একটা টাকাও না থাকে
আমাকে আমার আম্মা
বলবেন, ‘ভাত খা, গোসল করছিস?’
আমি বলব, ‘আজ বৃষ্টি, আজ আর গোসল করব না’

আম্মা ভাত বেড়ে দেবেন
রান্নাঘর থেকে আঁচলে ভাতের গামলা ঢেকে
তিনি দৌড় ধরবেন আঙিনা পেরোতে
শজনেডালে টিনের চালে তখন বৃষ্টি বৃষ্টি
বৃষ্টিতে তার শাড়ি ভিজবে
ভাত ভিজবে না ভাপ উঠবে

আমি খাব আর আম্মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবেন
আমার খাওয়া দেখবেন
আমার মুখ নড়বে
গলা দিয়ে ভাত নামলে সেই ভাত তার পেটেই যাবে
তার পেট ভরে যাবে
বিড়বিড় করবেন, ‘মুছে খা,
তোকে যে মোছা খাওয়াতাম মনে আছে
তাই তুই আজ এত বড়’

কাঁসার গেলাসে পানি ঢেলে আম্মা হাতে ধরে আছেন
মুখের ভাতটা শেষ হলে যদি আমি পানি চেয়ে বসি,
সেই পানি না খেয়েই ফের যদি ঢাকা চলে আসি আমি
আম্মা গ্লাস হাতে দাঁড়িয়েই থাকবেন দাঁড়িয়েই থাকবেন তিনি যেন বায়েজিদ বোস্তামি