জলরং ছবি

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

খোঁপা বাঁধতে গিয়ে দুহাত তুলেছ ওপরে। এক পাশের কেশদাম ঢেকে ফেলেছে তোমার চোখ, নাক, মুখ। কী জানি কী সুখ! শাড়ির আঁচলে ঢেকেছ বুক। সম্মুখে মেলে ধরেছ বিপুলা সৌন্দর্য। আনতো নয়নে চেয়ে আছ মাটিতে। স্মিতহাসি ঝুলে আছে ঠোঁটের কিনারে। লজ্জাবতী লতিকার মতো চুপসে আছে ফুল। মনে হচ্ছে কানে পরেছ ডালিম ফুলের দুল। দুঠোঁটের রঞ্জন যেন রঙিন প্রজাপতি। উড়ে গিয়ে ছুঁয়ে দেবে রৌদ্রদগ্ধ হৃদয়।

তোমার ছুঁয়ে দেওয়া এক ছটা স্পর্শ যেন বৃষ্টি...বৃষ্টি আর বৃষ্টি। তুমুল বৃষ্টি শীতল করবে আমার তৃষ্ণার্ত আঙিনা। আমার জমে থাকা এক শ বছরের সকল ক্লান্তি, ধুলো, বালু ধুয়েমুছে করে দেবে সাফ। আমি উর্বর হব পললগঠিত নরম মাটির মতো। শুকিয়ে যাওয়া কাঁঠলিপাতারং শাড়িতে আমায় রাখবে ঘুমিয়ে। আমি ঘুমাব, ঘুমাব আর ঘুমাব। আজীবন ঘুমাব তোমার কোলে মাথা রেখে।

তুমি ঠিকঠাক দেখে রেখো উড়নচণ্ডী এই আমাকে।
তোমার ভ্রুর কাজলে চেয়ে থাকতে থাকতে আমার রেটিনায় শিকড় গজাবে। আমি দেখব তুমি দেবী হয়ে ডানা মেলেছ সাদা দেয়ালে। লিওনার্দোর আঁকা ছবি হয়ে ঝুলে আছ আমার হৃদয়ে। শতেক বছর পরপর, হলুদ শাড়ির মিহি আঁচলে মুছে নিয়ো কষ্টগুলো। দুঃখগুলো। আমি মরে যাব তোমায় ভালোবেসে। ভালোবেসে আর ভালোবেসে। তুমি অনাদিকাল বেঁচে থেকো জলরং ছবি হয়ে, আমার আকাশদেয়ালে।
খেয়ালে কিংবা বেখেয়ালে, আমি ভেসে বেড়াব বাতাসে বাতাসে।